২৯ ডিসে, ২০১১

অভ্র ব্যবহার করে যে কোন ছবিতে ঝকঝকে বাংলা লেখুন (সাদা কোন ব্যাকগ্রাউন্ড ব্যাতীতই)!!



আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।

কম্পিউটারকে নির্দেশ প্রদানের জন্য ব্যবহৃত বাইনারি কোড প্রধানত তিন প্রকার, ASCII, EBCDIC, UNICODE. এগুলোর মধ্যে ইউনিকোড সর্বশেষ ও সর্বাধুনিক, যার বিশেষত্ব হচ্ছে এটি ১৬ বিটের এবং সমর্থন করে বিভিন্ন ভাষা, অক্ষর আর সিম্বল।
অভ্র হচ্ছে এমনই ইউনিকোড ভিত্তিক একটি টাইপিং সফটওয়্যার, এর মাধ্যামে বাংলা টাইপিঙের জন্য প্রদত্ত ফোনেটিক অপশনটির কোন জবাব নেই, লা জবাব যাকে বলে এক কথায়। কম্পিউটারে, বিশেষ করে ইন্টারনেটে বাংলা লেখা প্রচলনের যে বিপ্লব প্রত্যক্ষ করছি, তা এই অভ্রের কারনে বললেও ভুল হবেনা। তবে ছবিতে বাংলা লেখার ক্ষেত্রে অভ্র প্রায় শতভাগ ব্যর্থ! দোষটা অভ্রের নয় যদিও, ছবি এডিটিং সফটওয়্যার গুলোর। মাইক্রোসফট উইন্ডোজের বিল্ট ইন পেইন্টিং বাদে বেশিরভাগ ছবি এডিংটিং সফটওয়্যার গুলো, অন্তত আমি আজ পর্যন্ত যতগুলো দেখেছি, সেগুলোর কোনটিই ইউনিকোড ভিত্তিক টাইপিং সমর্থন করেনা, সেই পুরোন অ্যাসকি নিয়েই পরে আছে।

এখন ভেবে দেখুন ব্যাপারটা, আপনার টাইপিং সফটওয়্যার ইউনিকোড ভিত্তিক, পক্ষান্তরে ছবি এডিটিং সফটওয়্যার গুলো অ্যাসকি ভিত্তিক, এই দুয়ের মধ্যে সমন্বয় ঘটিয়ে অভ্র দিয়ে ছবি এডিটিং সফটওয়্যারের সাহায্যে কোন ছবিতে বাংলা লিখবেন কীভাবে? বেশ চিন্তার বিষয় বলেই তো মনে হচ্ছে!

তবে দুটো কথা বলে নিচ্ছি। মাইক্রোসফট উইন্ডোজের বিল্ট ইন পেইন্টার দিয়ে অভ্রর সাহায্যে বাংলা লেখার কথা বলছিনা আমি এখানে, বলা উচিতও না। কারন এভাবে বাংলা লিখতে গেলে সাদা রঙের আয়তকার ব্যাকগ্রাউন্ড পরে যায় ছবির উপর, ভয়াবহ রকমের বিশ্রী লাগে যা দেখতে। আর দ্বিতীয় কথা, আমি অ্যাডোবি ফটোশপ সিএস ফাইভ ব্যবহার করি। এটি দিয়েও অভ্রর সাহায্যে বাংলা লিখা যায়, তবে অক্ষরগুলো আগপিছু হয়ে যায়, এই আরকি! আমার নিজের নাম শত চেষ্টা করেও তারেক লিখতে পারলাম না, তারকে হয়ে যায় বারবার।

কথা আর না বাড়িয়ে চলুন শুরু করে দেই কাজ। কাজের জন্য লাগবে:
১. মাইক্রোসফট অফিস ওয়ার্ড।
২. PDF Maker.
৩. অ্যাডোবি ফটোশপ কিংবা যে কোন PDF to Image converter.

প্রথম ধাপঃ
মাইক্রোসফট অফিস ওয়ার্ড ওপেন করুন। যেই ছবিটির ওপর লিখতে চান সেটি কপি করে এখানে পেস্ট করে দিন। ছবিটিকে চারপাশ থেকে টেনে গোটা মাইক্রোসফট অফিস ওয়ার্ডের সাদা পেইজটিকে ঢেকে দিন। কি, পারছেন না তো? ডানে টানলে বামে কমে যায়, উপরে টানলে নিচে, তাই কি? এভাবে নয়। ছবিটির ওপর মাউসের রাইট বাটন ক্লিক করে “Text Wrapping” অপশন থেকে “Behind Text” নির্বাচন করুন



এবার ছবিটিকে টেনে বড় করুন, হয়ে যাবে।



ছবির যে কোন জায়গায় বাংলা লিখতে Tab, Spacebar, Enter এই তিনটি কী’র সদ্ব্যবহার করুন। আপনি ফন্টের কালার-সাইয পরিবর্তন, বোল্ড, ইটালিক করন সহ মাইক্রোসফট ওয়ার্ডের সাধারন ফরম্যাটিং অপশনের সমস্ত সুবিধাই পাচ্ছেন এখানে। Ctrl+D চেপে ফরম্যাট অপশনে প্রবেশ করুন।

কাজ শেষ হলে ডকুমেন্টটিকে Save করুন। Save করা হয়ে গেলে ডকুমেন্টটিকে Close না করে মাইক্রোসফট অফিস ওয়ার্ডের কোন Built-in PDF Extension এর সাহায্যে সরাসরি সেটিকে PDF ফরম্যাটে পাবলিশ করে ফেলুন। একথা বলছি কারন, ধরুন আপনার কম্পিউটারের অভ্রতে Default বাংলা ফন্ট হিসেবে আছে Siyam Rupali, আপনি Ekushey Puja ফন্ট ব্যবহার করে ছবিতে বাংলা লিখলেন। কিন্তু ডকুমেন্টটিকে Save করার পর Close করে নতুন করে Open করা মাত্রই ছবিতে লিখা আপানার বাংলা ফন্ট স্বয়ংক্রিয় ভাবে Siyam Rupali হয়ে যাবে। ছবিতে কাজ শেষ হয়ে গেলে আপনি ডকুমেন্টটিকে মাইক্রোসফট অফিস ওয়ার্ড থেকে সরাসরি PDF ফরম্যাটে পাবলিশ করলে এই সমস্যায় পরবেন না। তবে আপানি যদি ছবিতে Default ফন্ট ছাড়া অন্য কোন ফন্ট ব্যবহার না করে থাকেন, তবে Save করে পরবর্তীতে যেকোনো সময় PDF ফরম্যাটে পাবলিশ করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে আর Built-in PDF Extension এর প্রয়োজনীয়তা নেই, ইউনিকোড সমর্থন করে এমন যেকোনো PDF Maker Software দিয়েই তখন কাজ চালানো সম্ভব। ইন্টারনেটে তো এমন শতশত PDF Maker Software আছে।
মাইক্রোসফট অফিস ওয়ার্ডের একটি Built-in PDF Extension হচ্ছে “Save As PDF and XPS’’, ছোট্ট সফটওয়্যারটি ইন্সটল করুন, আর কোন ওয়ার্ড ডকুমেন্টকে Save করবার সময় Save As থেকে PDF নির্বাচন করুন। ব্যাস, হয়ে যাবে PDF। ডাউনলোড লিঙ্ক (৫৩০ কিলোবাইট):
View this link

এই ব্যপারে বিস্তারিত জানতে আমার পোস্টটি দেখুন।
http://www.pchelplinebd.com/?p=32899

দ্বিতীয় ধাপঃ
• তৈরিকৃত PDF টি অ্যাডোবি ফটোশপ দিয়ে Open করুন।
• File> Save as>Format থেকে JPEG নির্বাচন করে Save করুন.

হয়ে গেলো কাজ!



অ্যাডোবি ফটোশপ না থাকলে যে কোন PDF to Image converter সফটওয়্যার দিয়েও দ্বিতীয় ধাপটি সম্পন্ন করা যাবে। এমনি একটি PDF to Image converter সফটওয়্যার হচ্ছে PDFZilla। ৭ মেগাবাইটের এই সফটওয়্যারটি দিয়ে যেকোনো PDF কে আরও পাঁচটি ফরম্যাটে রুপান্তর করা যায়। ডাউনলোড লিঙ্কঃ
View this link
সিরিয়াল কী ভেতরেই আছে।
কেমন লাগলো তা জানাতে ভুলবেননা। সহজ, আপনারা অনেকেই এইভাবে ছবিতে বাংলা লিখে থাকেন। তবে যারা জানেনা তাদের জন্য এই পোস্ট।
বিস্তারিত পড়ুন ... »

১৮ ডিসে, ২০১১

নাম নিয়ে আমার কৌতুহল

যে ভূমিকা না লিখলেই নয়
ভাল একটা নাম চাই! ভাল'র সঙ্গা কি? অবশ্যই 'আনকমন' হতে হবে। নবজাতকের নাম রাখতে গিয়ে মোটামুটি সব বাবা-মা' ই আমার সাথে অন্তত এ ব্যাপারে একমত হবেন। মুসলিম হলে তো কথাই নাই। কারণ, আল্লাহ রোজ কিয়ামতের মাঠে বাবার নামের সাথে মিলায়ে বান্দাকে ডাকবেন। সুতরাং খারাপ বা বিদঘুট অর্থওয়ালা নাম ধরে আল্লাহ ডাকুক তা কেউই চাইবে না। যেমন-এই "জামাল মিয়া" যার মানে এই "একশো উট"! প্রথম 'দর্শনের' একটা গুরুত্ব আছে না?
একটা স্ট্যান্ডার্ড নামের তিনটা অংশ থাকে বলে অনেকেই মনে করেন। ফার্স্ট, মিডল এবং লাস্ট নেইম। প্রথম অংশে
তার নিজের নাম রাখা হয়। মঝাখানে বাবার নামের সাথে মিলিয়ে রাখা হয়। শেষ নাম বংশ বা সার (sur) নাম বলে পরিচিতি পেয়েছে। অনেকেই আবার মাঝখানটা স্কিপ করে সরাসরি লাস্ট নামে চলে যান।

আমাদের নাম বিভ্রাট
আমরা অনেকেই 'জ' ও 'য' (অর্থাৎ 'জিম' এবং 'যা'), 'স' ও 'ছ', 'ও' বা 'ও-কার' ইত্যাদি উচ্চারণের ফারাক বুঝতে পারি না। যার কারণে অন্যের কাছে বা ভিন দেশীদের আমাদের ভিনদেশীয় নামের উচ্চারণ ঠিক করে বলতে পারিনা। যেমন, 'জাহাংগীর' বা 'যায়েদ' বলার সময় 'জ' ও 'য' উচ্চারণ একইভাবে মেরে দিই। অর্থাৎ শুরুতেই গন্ডগোলটা বাধিয়ে ফেলি। আমার এক্স কলিগ (তিনি কিন্তু পিএইচডি)-এর Zoo বলা তো আমার অফিসের কেউই বুঝলো না। শেষমেষ লিখে বোঝাতে হয়েছিল।
টেলিফোনে আমার রুমমেট ইউটিলিটি বিল দিতে গিয়ে নিজের নাম 'সাজ্জাদ' উচ্চারণ করল এভাবে, এস এ জি জি এ ডি (আমরা যে বর্ণমালাকে 'যেড' বলে জানি তা আমেরিকায় হয়েছে 'যি')। ক'দিন পর বিলে নাম এল 'সাজ্ঞাদ' হয়ে, 'সাজ্জাদ' আর বানানো গেল না!

'আঈন' তো ফেলে দেয় মহাবিপদে। গলার মাঝখানে মাইরপ্যাচ করে 'নামের ভিতর 'আঈন' লুকিয়ে থাকা কাউকে ডাকা আমাদের ধাতে কুলায় না। যেমন, মা'মুন, মাসঊদ। আমরা ডাকি 'মামুন', 'মাসুদ' বলে। আমার ইরাকী প্রতিবেশী আমার ভায়রার নাম 'মামুন' শুনে বুঝতেই পারে না এটা কোন নাম। অথচ এটা কিনা ওদের কাছ থেকেই এসেছে। কত না গল্প বাগদাদের খলীফা মা'মুনুর রশীদকে নিয়ে! বুঝলাম 'আঈন'-এর জটিলতায় আমার ভায়রা আটকে গেল!

এ সমস্যা শুধু আমাদের না। ভারতীয় ও পাকিস্তানীদেরও।
যেমন আমার মেয়ের সাথে আরবী পড়তে যায় 'রিদা'। আমাদের মসজিদের জর্ডানী ইমাম বললেন, এইটা তো কোন নাম না, এইটা হবে (একটু টেনে, মানে মাদ্দ দিয়ে) 'রিদআ'!
আমার আরেক পাকিস্তানী প্রতিবেশীর ছেলের নাম 'সাইফান' শুনে ইমাম সাহেব সাইফানের বাপকে জিজ্ঞেস করলেন, 'ও তো একটা সাইফ। একা হয়ে দুইটা সাইফ হয়ে গেল কেমনে?'
সাইফানের বাবা কাইয়ুম বললেন, একটু ব্যতিক্রম নাম রাখতে গিয়ে এই কাজটা হয়ে গেছে। ভুলটা পরে বুঝতে পেরেছে আমাদের কাইয়ুম ভাই। 'সাইফ' মানে হল 'তরবারী' বা একটা তরবারী, 'সাইফান' মানে হল, 'দুইটা তরবারী'!

দেশী ভাই হালিমকে জিজ্ঞেস করলাম, আপনার ছেলে ও মেয়ের নাম কি?
উনি বললেন, 'হাদীন' আর 'রাদীন'
বললাম, মানে?
উনি বললেন, "আল্লাহ্‌র 'হাদী' নামের শুদ্ধ উচ্চারণ এটা। হাদীর শেষে দুইটা 'যের' বা 'কাসরা' আছে না? এটা আসলে 'হাদীন' হবে।" রাদীনেরও ওরকম ব্যাখ্যা দিলেন।
বললাম, হুম, জব্বর জিনিস আবিষ্কার করলেন!

আমার ভারতীয় প্রতিবেশী মুজাম্মিল বলে আমরা মানে বাংলাদেশীরা নামের ভিতর নাকি 'উল', 'উর' বা 'উ -জাতীয় শব্দ' বেশী যোগ করি। আর ওরা করে 'ইল' বা 'ইর' বা 'ই-যুক্ত' শব্দ। যেমন, আমাদের 'ফারুকুর রহমান', 'মুজিবুর রহমান', 'আশরাফুল ইসলাম' ইত্যাদি। ওদের নাকি এরকম নাই। আছে 'তুজাম্মিল', 'মুজাম্মিল', 'আব্দুল কালাম' ইত্যাদি।

'আরিয়ান' নাম নিয়ে গবেষণা
হঠাৎ করে এই নামটা বেশ পপুলারিটি পেয়েছে। অন্তত আমার কাছে তাই মনে হয়েছে। আমার এক নিকটাত্মীয়া তার ছেলের নাম রেখেছেন 'আরিয়ান'। আমার এক এক্স ভারতীয় (গুজরাটি) কলিগ যতীন মিস্ত্রী তার ছেলের নাম রেখেছে 'আরিয়ান'। আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধু সোহেল ওদের দ্বিতীয় ছেলের নাম এই দুই সপ্তাহ আগেই রাখল আরিয়ান। ফেসবুকে আরিয়ানের ছবি দিতেই সোহেলের স্কুল জীবনের আরেক ক্লোজ ফ্রেন্ড আজাদ বল্ল, ওর ছেলের নামও তো 'আরিয়ান'। কি চমৎকার মিল! কেউ কারো কাছে না শুনে সবাই এমন নাম রেখে ফেলেছে। পরে জানলাম শাহরুখ খান ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী গৌরী খানের ছেলের নামও নাকি 'আরিয়ান'!
আমি একটু 'গবেষণা' শুরু করে দিলাম। এই নামটা আসল কোত্থেকে? আমার আত্মীয়া বললেন, ইসলামী নামের বই থেকে পেয়েছেন। যতীন বল্ল, এটা ওদের এক 'গড'-এর নাম। সোহেল চমৎকার একটা ঐতিহাসিক ব্যাকগ্রাউন্ড বল্ল। সেখানে যাওয়ার আগে আমাদের মসজিদের আরেক ফিলিস্তিনী ইমামের সাথে আমার কথোপকথনটা আপনাদের বলে নেই। উনি তখন কি যেন লিখছিলেন।

আমিঃ (সালাম ও অনুমতি নিয়ে) আরিয়ান কি ইসলামী নাম?
ইমামঃ না।
আমিঃ ওকে। বুঝলাম এটা কোন ইসলামী ব্যক্তিত্বের নাম না। তবে আরবীতে এই নাম আছে কি?
ইমামঃ না।
আমিঃ আপনি কি শুনেছেন এই নাম কখনো?
ইমামঃ হ্যাঁ।
আমিঃ (অনেক আশা ও আগ্রহ নিয়ে) তাহলে বলেন এইটা কোন গোছের নাম তাহলে?
ইমামঃ এইটা 'ইহুদী' নাম!
আমিঃ (ধপাশ করে পড়ে গিয়ে) মানে? ইমামঃ এইটা সেমেটিক, হিস্ট্রিক্যাল নেইম!
আমিঃ আমার পরিচিত অনেক ভাল মুসলমানই রেখেছে এই নাম।
ইমামঃ ইট্‌স অলরাইট।

ইমাম সাহেবের সাথে কথা শেষ করে আমার বন্ধুকে ফোন দিলাম।
- দোস্ত, কংগ্রাচুলেশন! নামটা তো বেশ রেখেছিস। তোরা কি আগেই এইটা ঠিক করে রেখেছিলি?
- হ্যাঁ। এটা অনেক খেটে-খুটে জোগাড় করারে দোস্ত।
- তা এই নামটা কোন ভাষার? কিভাবে পাইলি? মানেই বা কি?
- আরবীর। ইসলামী সাইট থেকে পাইছি। মানে হল 'সাহসী', বা 'বীর।
- ভেরী গুড। কোনো আ্যরাবিয়ান আলেমের কাছে শুনিছিলি কি? (ওর পাশের মসজিদটা হল
আরবভাষীদের দ্বারা পরিচালিত)
- না।

আমি আমার বন্ধুকে আমাদের মসজিদের ইমাম সাহেবের সাথে আমার কথোপকথনগুলো তুলে ধরলাম।
সব শুনে ও বল্ল, "না এটা ঠিক না। এটা ইহুদী নাম না। উনি হয়তো Aryan'র কথা বলেছেন, আমার ছেলের নাম Arian - এইটা মূলত পারসিয়ান নাম। আফগান আর ইরানের বর্ডারের যে প্রদেশটা আছে, ওই এলাকার লোকেরা আফগান না ফার্সী ভাষায় কথা বলে। ওখানকার এক পাহলোয়ান নাম ছিল 'আরিয়ান'।"
আমি বললাম, "ভেরী গুড। আমাদের আরিয়ানও ইসলামের পাহলোয়ান হবে ইনশাল্লাহ্‌।" এভাবেই কথা শেষ করে পরেরদিন আমার ইরানী কলিগ এলনাযকে আরিয়ান নামের আমার অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরলাম।
এলনায বল্ল, হ্যাঁ, আরিয়ান নাম ইরানে অনেক আছে।
বললাম, গ্রেট। এটা মুসলিমদের মধ্যে প্রচলিত নিশ্চয়ই (কারণ আমি জানি ওদের দেশে অনেক ইহুদী আছে)? বানান বলবে কি?
এলনায বল্ল, "নট নেসেসারিলি। অমুসলিমদের মধ্যেই মূলত এ নামের প্রচলনই বেশী। বানান হল, Arian।"

আমি আমার বন্ধুকে এ ব্যাপারে আর কিছুই বললাম না।
(চলবে)

____________________________________________

মূল লিঙ্কঃ http://sonarbangladesh.com/blog/shahin/75985
বিস্তারিত পড়ুন ... »

৬ ডিসে, ২০১১

হিন্দি সিরিয়াল দেখা- দোষটা কি শুধু মা-বোনদের?

হিন্দি সিরিয়ালের দর্শক অধিকাংশই মা-বোনেরা, যাদেরকে তিনটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করা যায়-
১/ অনেকেই হাতে কোনো কাজ নেই তাই, টাইম পাস করার জন্য হিন্দি সিরিয়াল দেখেন।
২/ অনেকে আবার নাটকের কুফল সম্পর্কে জানা সত্ত্বেও এমনিতেই দেখেন।
৩/ এরা ভালো মন্দের বাছ-বিচার করেন না। যা দেখবেন তাই ভালো, তাই আধুনিক, তাই সভ্যতা। সিরিয়ালগুলো দেখে মজা পান তাই দেখেন।
প্রশ্ন হলো- আমাদের মা, বোন, স্ত্রী, খালা, ফুফু… এনারা হিন্দি সিরিয়াল কেন দেখেন?
প্রধান কারণই হলো আমাদের স্যাটেলাইটে ভারতীয় চ্যানেলের আধিক্য। দেশের কোন নাটক আমাদের কাছে ভালো না লাগলে, চ্যানেল পরিবর্তন করতে করতে শেষ পর্যন্ত ভারতীয় চ্যানেলে গিয়েই, হাতের রিমোটটাকে কান্ট্রোল করা বন্ধ করে দেই। সেসব চ্যানেলে সারাদিন নাটক হতেই থাকে।
দ্বিতীয়ত, সিরিয়ালগুলোর জৌলুসপূর্ণ পরিবেশ, তাদের রঙ, ঢং, মেকআপ, স্টাইল, বড় বড় বাড়ি, গাড়ি, দামী শাড়ি, গয়না- শুধু তাই নয়, বরং তাদের ড্রেস পরার ধরনও আমাদের তরূন প্রজন্মকে আকৃষ্ট করে। এগুলো হচ্ছে নাটকের উপরিভাব। এসবের ছলে নাটকের ভিতরে যা শিখছি, তা আরো মারাত্মক।
ছেলের গায়ে মেয়ের পরে যাওয়া, মেয়ের ওড়না উড়ে ছেলের মাথায় গিয়ে পরা- ভালোবাসার সূচনাটা এসব দিয়েই শুরু। প্রায় ৩ মিনিটের মত নাটক এখানেই থমকে দাঁড়ায়। এটাই আপাতত আজকের এপিসোড, পরবর্তী এপিসোড দেখার জন্য অধির অপেক্ষায় থাকে দর্শকরা। বিয়ের আগে অবৈধ সম্পর্ক দেখানোটা, নাটকের রীতিতে পরিণত হয়েছে। আর এগুলো দেখাতে আমরা যেমন দ্বিধা বোধ করি না, তেমনি লজ্জাও পাই না। বরঞ্চ মজাই পাই। এই হল আমাদের অবস্থা!
বিয়ে করাটাকে ঝামেলা আর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ককে রোমান্টিক করে আমাদের সামনে দেখানো হয়। আমরা হা করে দেখি আর হজম করি। পরকিয়া, সম্পত্তির কারণে ভাই-ভাই ঝগড়া, একে অপরের উপর প্রভাব বিস্তার করার অভিনব কায়দা, স্ত্রীর কুটনৈতিক চাল, ভুল বুঝাবুঝি- এসব যেন নাটকের নিত্য নৈমান্তিক ব্যাপারে পরিণত হয়েছে। এসব আমাদের মূল্যবোধ, আমাদের ধর্ম, পরিবার, সমাজ সমর্থন না করলেও মজা পাই তাই দেখি।
এর সাথে একটা কথা যা না বলতেই নয়- ভারতের নাটকে পরিবারের দাদী, নানী বা প্রধান মেয়ে চরিত্রকে ধর্মীয় ব্যাপারে খুব পন্ডিত হতে দেখা যায় । তারা কয়েকদিন পর পর গৃহে শান্তি আনার জন্য পূজার আয়োজন করেন। রামায়নের বিভিন্ন ঘটনা তুলে ধরে সামাজিক সমস্যার সমাধান বের করার কথা পরিবারের সামনে তুলে ধরেন। আমরা কত জন আমাদের নাটকে আমাদের ধর্মকে ফুটিয়ে তুলতে পেরেছি? আমাদের কু’রআন, আমাদের হাদিস কি দৈনন্দিন সমস্যার সমাধান দেয় না? তা নিয়ে তো আমাদের গুণী গল্পকারদের নাটক বানাতে দেখি না। তরূণ মডেলদের তো এসব অভিনয়ে এগিয়ে আসতে দেখি না । ভারতীয় সিরিয়ালে গায়েত্রী মন্ত্র শুনতে শুনতে আমাদের তা মুখস্ত হয়ে গেছে। অথচ, আমাদের চার কালিমা আমরা কয়জন মুসলমান মুখস্ত জানি? ভারতীয় সিরিয়ালে তাদের ধর্মীয় কথা শুনতে আমাদের ভালো লাগে আর আমাদের দেশের পরিচালকেরা, গল্পকাররা দর্শক হারানোর ভয়ে ধর্মের কথা বলা তো দূরে থাক, নাটকের মাধ্যমে সমাজে ভালো কিছু দেয়ার কথাও ভাবেন না।
এবার আসি দ্বিতীয় প্রসঙ্গে। দেশীয় নাটকে দর্শক সংখ্যা কম কেন? স্বভাবতই, কোটি টাকা বাজেটের নাটকের সামনে হাজার টাকা বাজেটের নাটকটা একটু ফিকে বলে মনে হবেই। তবে এটা মানতেই হবে হিন্দি সিরিয়ালে যা দেখায় তা আমদের সামাজিক অবস্থার বহির্ভূত। বরঞ্চ আমরা যদি তেমনভাবে চলি তাহলে, সামাজিক বিশৃংখলতা আরো বাড়বে। অপরদিকে আমাদের নাটকগুলো আমাদের সামাজিক অবস্থা তুলে ধরলেও দিন দিন লক্ষ্য করছি- দর্শক বাড়ানোর তাগিদে আমাদের নাটকগুলো ড্রেসের দিক দিয়ে, গল্পের দিক দিয়ে হিন্দি সিরিয়ালের নকল করতে শুরু করেছে।
এবার যে ব্যাপারটা আমাদের বুঝতে হবে তাহল- হিন্দি সিরিয়াল দেখলে ক্ষতি কি? তাদের নাটকের ১০০% খারাপ তা আমি বলি না। কারণ তাদের নাটকেও হাস্যরস থাকে, নাটকীয়তা থাকে, ঢং থাকে- যা দর্শককে বিনোদন দেয়। তবে একজন বিবেক সম্পন্ন মানুষ হিসাবে, সচেতন নাগরিক হিসাবে আমরা কখনোই খারাপ জিনিস দেখতে বা চর্চা করতে পারি না। কিন্তু আমরা দিন দিন সেসব নাটকের কুফলটাই নিজের মধ্যে নিয়ে আসছি। তাছাড়া সত্যি বলতে, খারাপ জিনিস মানুষকে বেশি আকৃষ্ট করে এবং স্মরনে থাকে। আজ আমরা লাইফ স্টাইল পরিবর্তন করছি তাদের অনুকরণ করে। শাড়ি পরার ধরন শিখছি তাদের দেখাদেখি। আর শাড়ি তো দূরে থাক, টপস আর প্যান্ট পড়তেই আমাদের বেশি ভালো লাগছে। আর আমাদের ভাইরা ইদানিং এমন টাইপের প্যান্ট পড়েন যেন কোমড় থেকে পরে যায়। ভদ্রতা-সভ্যতা কি, আমরা কেন পোশাক পরি, তার সংজ্ঞা আমাদের ভাই-বোনদের ব্রেন থেকে উঠেই গেছে। শুধু তাই নয়, আমাদের মিডিয়াও আমাদের এমনই শিক্ষা দিচ্ছে। সেদিন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে একটা নাটকের শুটিং দেখার সৌভাগ্য হলো। নাটকের একটা দৃশ্যে, “মেয়েটি টপস আর প্যান্ট পরে চটপটির দোকানে দাড়িয়ে আছে”। দেখলাম- রাস্তার সবাই মেয়েটির দিকে তাকিয়ে আছে। এমন ড্রেসে থাকলে ছেলেরা তাকাবেই। বর্তমানে আমাদের নাটকগুলোতে এমন ড্রেসেই মেয়েরা উপস্থিত হয়। ওড়না না পরাটাই এখন ফ্যাশন। মেয়েরা তাদের ব্যাপারে সচেতন না আর এর ফয়দা তুলছে মিডিয়া। তাছাড়া শুধু, পোশাক-পরিচ্ছদেই এমন নোংরামী সীমাবদ্ধ থাকছে না। প্রভাব পড়ছে আমাদের সামাজিক, মানসিক সব জায়গায়। কোন কোন পরিবারে মা-দের সিরিয়াল দেখার নেশা এতই থাকে যে, তারা ছোট ছোট ছেলে-মেয়েদের পড়ানোর সময় পান না। বরঞ্চ দেখা যায়, ছেলে মেয়েদের নিয়েই নাটক দেখতে বসেন। ফলে ছোটবেলা থেকেই এরা পরিচিত হচ্ছে অপসংস্কৃতির সাথে।
এবার দেখুন আমাদের প্রিন্ট মিডিয়ার অবস্থা। এরাও গড্ডালিকায় গা ভাসাতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। নিজ দেশের সংস্কৃতি, মূল্যবোধ, সভ্যতাকে পত্রিকার মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলবেন সেই সাহসও তাদের নেই। প্রায় একমাস আগে একটা অনলাইন পত্রিকায় চাকরি পেয়েছিলাম। তারা আমাকে ‘লাইফ স্টাইল’ বিভাগটা সামলাতে বলে। সাথে সাথে এও বলে দেয় যে, ‘বেশি কষ্ট করতে হবে না, শুধু নেট থেকে ভারতের ‘সানন্দা’ ম্যাগাজিনটা দেখে নিয়ে কপি পেষ্ট করে দিলেই হবে’। শেষে, না করতে বাধ্য হলাম। এই হলো আমাদের মিডিয়া! আমরা নিজেরাই তো নিজেদের সংস্কৃতির গলায় ছুরি চালাচ্ছি। দোষ দিবো কাকে? তাছাড়া কিছু পত্রিকা আছে, যারা নিজেদের আধুনিক বলে দাবি করেন আর ‘বিনোদন’ এবং ‘লাইফ স্টাইল’ পাতার মাধ্যমে, মেয়েদের টপস আর প্যান্ট পরা, স্লিভ লেস ডেস পরা, আর ছেলেদের চুল থেকে শুরু করে প্যান্ট পর্যন্ত এক উদ্ভট সাজে সজ্জ্বিত করাকে সভ্যতা ও আধুনিকতা বলে প্রচার করেন। আর আমাদের অবস্থা দেখুন, আমরাও কেমন জাতি! মানুষ হিসাবে আমরা কিভাবে চলবো বা আমাদেরকে কোনটা মানায়, সেই দিকে পর্যন্ত আমরা খেয়াল করি না। কোনটা সঠিক এ ব্যাপারে আমরা সন্ধান করি না। নিজেকে নিজেই প্রশ্ন করতে ভুলে গেছি। এসব অসভ্যতাকে আধুনিকতা মনে করে হুমড়ি খেয়ে, টাকা দিয়ে কিনি। লজ্জা হয়া উচিত আমাদের।
এবার আমরা একটু স্যাটেলাইট খাতের অর্থনৈতিক হিসাব কসে দেখি, আমরা কোথায় আছি। দেশে প্রায় ২৭২টি চ্যানেল দেখা যায়। যার মধ্যে বাংলাদেশ ৪০টি কিনে নেয়। তার প্রায় সবই ভারতীয়। ভ্যাটসহ স্টার গ্রুপের একটি চ্যানেলের জন্য গ্রাহক প্রতি ৭৩:৩১ টাকা, সনির জন্য ৮৬: ২৫ টাকা দিতে হয়। সেই হিসাবে বছরে অন্তত এক হাজার কোটি টাকা শুধু মাত্র স্যাটেলাইট খাতে ভারতকে দিতে হয়। শুধু তাই নয়, তারা যদিও আমাদের দেশের চ্যানেল দেখেনা, তবুও আমরা তাদের নাটক দেখার পাশাপাশি তাদের পণ্যের সাথেও দিন দিন পরিচিত হচ্ছি। আফসোস! না আমরা আমাদের দিকে চাকাচ্ছি, না সমাজের দিকে আর না অর্থনীতির দিকে। আমরা টিভিতে বিশৃংখলা দেখছি, সমাজে এর প্রভাব লক্ষ্য করছি, পরিণতি দেখছে, তারপরও আমরা সচেতন হচ্ছি না, দেখা বন্ধ করছি না। আমাদের মধ্যে ধর্মীয় জ্ঞান, মূল্যবোধ, দেশপ্রেম জাগ্রত না হলে, শেষে সরকার চ্যানেল বন্ধের আদেশ দিলেও(আমি এখন চ্যানেল বন্ধের কথা বলছি না) দেখা যাবে আমরাই এর প্রতিবাদ করছি। তাই সঠিক উপলব্ধি আমাদের মধ্য থেকেই আসতে হবে।
এখন প্রশ্ন আসতেই পারে, হিন্দি সিরিয়াল না হয় নাই দেখলাম, কিন্তু নাটক, ফিল্ম, গান এগুলোতো আমাদের বিনোদনেরই অংশ, এবার তাহলে আমরা কি করব? অবশ্যই আমাদেরকে একটা বিকল্প ব্যবস্থা নিতে হবে। যেমন-
১/ আমাদের আশেপাশে অনেক ঘটনা ঘটে যায়। শুধু যে ছেলে-মেয়ে কেন্দ্রিক ভালোবাসা সম্পর্কীয় ঘটনা ঘটে তা কিন্তু নয়। পৃথিবীতে চলতে ফিরতে ঘটনার কমতি হয় না, আর সমস্যাও কম সৃষ্টি হয় না। তাই আমাদের যারা গল্প রচনা করতে জানেন, তারা মানুষের দৈনন্দিন সমস্যাকে তুলে ধরবেন, এবং নাটকের মাধ্যমে তার সুষ্ঠ সমাধান দেয়ার চেষ্টা করবেন। এতে দর্শকরা বিষয়টি উপভোগের সাথে শিখবে। উদাহরণস্বরূপঃ মিথ্যা কথা বললে মানুষের যে কি পরিমান ক্ষতি হয়, তা কিন্তু ছোট একটা নাটকের মাধ্যমেই সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা যায়। এটা সত্য, যারা পড়াশুনা করতে জানে না, তারাও টেলিভিশনের দর্শক। আর এই মাধ্যমটি মানুষকে বেশি আকৃষ্ট করে। সুতরাং এখনই আমাদের একটা পদক্ষেপ নিতে হবে। তাছাড়া শুধু নাটক বানালেই হবে না, তার ব্যাপক প্রচারণাও করতে হবে, যাতে মানুষ বিজাতীয় কুসংস্কৃতি ঝেড়ে নিজ দেশের সংস্কৃতি-সভ্যতার প্রতি যত্নশীল হয়।
২/ নাটকের মডেলরা (ছেলে-মেয়েরা) শালীন পোশাকে থাকবে। কোনো মেয়ে যদি ইসলামী ড্রেসে হিজাব করে অভিনয় করতে চায়, তাহলে তার জন্যও মিডিয়ার দুয়ার খোলা রাখতে হবে। ইলেক্ট্রোনিক মিডিয়াকে অনেকেই খারাপ দৃষ্টিতে দেখেন। দেখার পিছনে অবশ্য কারণও আছে। তো, সেই সংজ্ঞাকে পরিবর্তন করতে হবে। সুন্দর গল্প, অভিনয়, সুষ্ঠ মস্তিষ্কের মানুষ দিয়ে মিডিয়া জগৎ সাজাতে হবে।
৩/ সুন্দরী প্রতিযোগিতা হয়ে মেয়ের অপমান করার চেয়ে গল্প লেখার প্রতিযোগিতা করা হোক। যার গল্প সুন্দর হবে সেটা দিয়ে নাটক বানানো হবে। গল্পের বিষয় থাকবে-‘সামাজিক অবস্থা, বাস্তবতা ও সমাধান’।
৪/ নাটকের মধ্যে অবশ্যই নাটকীয়তা, হাস্যরস থাকবে, তা নাহলে মানুষ মজা পাবে না।
৫/ অনেক পরিচালক, গল্পকারদের মধ্যে ক্ষমতা দখলের একটা প্রবণতা থাকে। তারা নবীনদের সুযোগ দিতে চান না। সত্যি বলতে মানুষের কিছু সহজাত প্রবৃত্তি থাকে। মানুষ প্রভাব বিস্তার করতে চায়, দাপট দেখাতে চায়। কিন্তু, প্রত্যেক জিনিসের একটা সীমা থাকে। তেমনি পুরনো ব্যক্তিরা যদি ক্ষমতা আকড়ে থাকেন, নবীনদের সুযোগ না দেন সেক্ষেত্রে আমাদের চলচ্চিত্র তথা নাটক অঙ্গনে আমরা পরিবর্তন দেখার আশা করতে পারি না।
হিন্দি সিরিয়াল দেখার জন্য আমরা অনেকেই একচেটিয়া মা-বোনদের দোষ দেই। এ নিয়ে পরিবারে অসন্তোষ, মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয়। ব্যাপারটা যদিও হাস্যকর যে, সামান্য একটা টিভি সিরিয়ালের কি জোর যে, সে পরিবারে ঝগড়া লাগাতেও সক্ষম। তা যাই হোক। জোড় করে কিছু আদায় করা যায় না, আর মানুষকে সঠিক জ্ঞানও দেয়া যায় না। তাই তো আল্লাহ তা’য়ালা কুরআনে হিকমাতের (জ্ঞান) কথা বলেছেন, বিচক্ষনতার কথা বলেছেন। তাই আমাদেরকেও তেমন পরিচয় দিতে হবে। আমরা যদি আমাদের মা, বোন বা স্ত্রীকে বলি-‘আজ থেকে তোমাকে হিন্দি সিরিয়াল দেখতে দিবো না, টিভি বন্ধ করো’ ইত্যাদি… ইত্যাদি। তাহলে কিন্তু হবে না। বরং উপরের সমাধানগুলোর পাশাপাশি তাদেরকে যদি আমরা নম্রতার সাথে বুঝাই, আলাপ আলোচনা করি, কুফলগুলো প্রকাশ করি, তাহলে আশা করা যায়, আমাদের পরিবার সঠিক সন্ধান পাবে। শুধু একটা প্রশ্ন করে দেখুন-‘তুমি এগুলো কেন দেখো’? বাকিটা আপনা আপনি প্রশ্ন উত্তরের মাধ্যমে সমাধান হয়ে যাবে।
সুতরাং, শুরুতেই, আমাদের ধর্ম-সভ্যতা কি বলে, আমাদের মাটি-দেশ আমাদের কি শিখায়, তা আমাদের বুঝতে হবে। নিজ থেকেই উপলব্ধি করে নোংরা সংস্কৃতির উপর কুঠারাঘাত করতে হবে। আশা করা যায়, এক্ষেত্রে সরকারও আর্থিক সহায়তা করবে আর আমরা আমাদের সংস্কৃতিকে সুন্দরভাবে নতুন আঙ্গিকে বিশ্বের মাঝে ফুটিয়ে তুলতে পারবো।

http://www.sonarbangladesh.com/blog/KUMKUM/78657
বিস্তারিত পড়ুন ... »

bdnews24.com - Home

ইরান বাংলা নিউজ

বিবিসি বাংলা

দৈনিক সংগ্রাম