১৫ মে, ২০১২

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ হাসপাতাল নিজেই অসুস্থ: জরুরী চিকিৎসা প্রয়োজন

চট্টগ্রাম বন্দর হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৬৬ সালে। বন্দর কর্মকর্তা-কর্মচারী ও স্থানীয় জনসাধারণের চিকিৎসাসেবা প্রদানের মহান লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ হাসপাতাল বর্তমানে নিজেই মুমুর্ষ অবস্থায় নিপতিত। এখানে প্রতিবছরই নতুন ডাক্তার নিয়োগ হয় এবং বছর শেষে চাকুরী ছেড়ে ডাক্তার চলে যায় অন্যত্র। কর্তৃপক্ষের টাকায় কেনা ঔষধ নিতে একই ব্যক্তিই ভুয়া রোগী হয়ে আসে প্রতিদিন। ১৯৮৪ সালে পূর্ণাঙ্গ হাসপাতাল হিসেবে ঘোষণা করা হলেও এখানে নেই কোন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার কিংবা পদ্ধতিগতভাবে কার্যকর আলাদা আলাদা ওয়ার্ড। কোটি টাকা ব্যয়ে পরিচালিত নাম মাত্র পূর্ণাঙ্গ হাসপাতালটি বর্তমানে শুধুমাত্র প্রাথমিক চিকিৎসার কাজটুকুই করে যাচ্ছে। জরুরী বিভাগে গুরুতর কোন রোগী আসলে তা শুধু অন্যান্য হাসপাতালে রেফার করে দেয়া ছাড়া কর্মরত ডাক্তারদের কিছুই করার থাকে না। বর্তমানে হাসপাতালটিতে সর্বমোট নয়জন মহিলা ডাক্তারসহ আটাশ জন চিকিৎসক এবং একচল্লিশ জন নার্স কর্মরত রয়েছেন। অনুসন্ধান করে জানা যায় পদোন্নতির ব্যবস্থা না থাকা, কর্মরত চিকিৎসকদের পেশাগত উন্নয়নের সুবিধা না থাকা, দুর্নীতি, চিফ মেডিকেল অফিসারের পশ্চাতমুখী চিন্তাধারা এবং সঠিক পরিকল্পনা আর অদক্ষ ব্যবস্থাপনার কারণে চিকিৎসরা দীর্ঘদিন এই হাসপাতালে অবস্থান করতে অনীহা প্রকাশ করে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ডাক্তার বন্দর হাসপাতালে মেডিকেল অফিসার পদে যোগদান করেছিলেন পঁচিশ বছর আগে। জাতির দুর্ভাগ্য, বাংলাদেশের একজন মেধাবী ছাত্র এমবিবিএস পাশ করে বন্দর হাসপাতালে যে পদে যোগদান করেছিলেন পঁচিশ বছর পর তিনি একই পদে থাকা অবস্থায় অবসর গ্রহণ করছেন গত জানুয়ারীতে। জাতির সেরা মেধাবী ছাত্র হিসেবে ডাক্তারটিরও বিরাট সম্ভাবনা ছিলো কোন বিষয়ে বিশেষজ্ঞ / প্রফেসর হয়ে কর্মস্থল থেকে অবসর গ্রহণ করার। শুধুমাত্র পরিবেশ এবং সুযোগের অভাবে তিনি জাতির চাহিদা পুরণে ব্যর্থ হয়েছেন। এক্ষেত্রে তাঁর ব্যক্তিগত ব্যর্থতা যেমন রয়েছে, তেমনি চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষসহ রাষ্ট্রিয় ব্যর্থতাও এড়িয়ে যাওয়ার মতো নয়। এখানে কর্মরত চিকিৎসকদের পেশাগত উন্নয়ণে এফসিপিএস কিংবা উচ্চতর ডিগ্রি অর্জনে নিরুৎসাহিত করার ঘটনাও রয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অপর একজন মহিলা ডাক্তার বন্দর হাসপাতালে যোগদান করার পূর্বে শিশু বিষয়ে এফসিপিএস (শিশু), পার্ট - ১ পাশ এবং চুড়ানত্ম পরীক্ষা দেয়ার জন্য তিন বছর প্রশিক্ষণও সম্পন্ন করেন। বন্দর হাসপাতালে যোগদান করে তিনি দেড় বছর চাকুরী করেছেন, তবুও ছুটি মিলেনি এফসিপিএস ফাইনাল পরীক্ষা দিতে যাওয়ার। অভিযোগ পাওয়া গেছে, বন্দর হাসপাতালের প্রধান মেডিকেল কর্মকর্তা (সিএমও) তার জীবনের বঞ্চনার কথা ষ্মরণ করে বলেছেন, আমি কাউকে এফসিপিএস করার জন্য যেতে দেব না, এফসিপিএস এখানে প্রয়োজন নেই। অথচ বন্দর হাসপাতাল প্রবিধানে বা আইনী কোন বাধা না থাকা সত্ত্বেও তিনি সজোরে বাধা দিয়েছেন অপর মহিলা সহকর্মীর পেশাগত উন্নয়ণে। এ যেন অনেকটা শাশুড়ী তার শাশুড়ী কর্তৃক নির্যাতিত হয়ে ছেলের বউয়ের উপর প্রতিশোধ নেয়ার মতো। এই ঘটনার পরে অবশ্য অনেক কাটখড় পুড়ে প্রথম ব্যাচ হারিয়ে, অনেক টাকা গচ্ছা দিয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপে মহিলা ডাক্তারটি তার ন্যায্য পাওনা এফসিপিএস ফাইনাল কোর্সে যোগদানে সমর্থ হয় আরো ছয়মাস পরে। ডাক্তার হয়ে অন্য ডাক্তারের পেশাগত উন্নয়ণে বাধাগ্রস্থ করা কখনো কাম্য হতে পারে না। এখানে যে চিত্র দেখা যায়, নারীর উন্নয়ণে নারীরাই বাধাগ্রস্থ করছে সচেতন কিংবা অবচেতন মনে। এই হীনমন্যতা শুধু বঞ্চিত মহিলা ডাক্তারটির ব্যক্তিগত উন্নয়ণ বাধাগ্রস্থ করেনি, পুরো দেশের নারীর ক্ষমতায়ন, নারীর উন্নয়ণসহ গোটা জাতির মানবসম্পদ উন্নয়ণে অপুরণীয় ক্ষতি সাধন করবে। এই বাধা চিকিৎসা জগতে একজন নারীর নেতৃত্ব অংকুরেই বিনষ্ট করার সমতুল্য মনে করছেন সচেতন মহল। এই ব্যাপারে অনেক চেস্টা করেও চিফ মেডিকেল অফিসার (সিএমও) অঞ্জনা দত্তের সাথে যোগাযোগ সম্ভব হয়নি। কর্মরত ডাক্তাররা যদি নিজের পেশাগত উন্নয়ণে উচ্চতর ডিগ্রি গ্রহণ করতে না পারেন তাতে ব্যক্তিগত ক্ষতি যেমন রয়েছে তেমনি রয়েছে জাতিয় ক্ষতি। এতে করে দেশ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সংকটে পড়বে এবং একজন মেধাবীর মেধার অপচয়ও ঘটে।

বন্দরে কর্মরত প্রকৌশলীরা অহরহ দেশী-বিদেশী উচ্চতর প্রশিক্ষণ করার সুযোগ পেলেও ডাক্তারদের ক্ষেত্রে চরম উদাসীন্য পরিলক্ষিত হয়। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয় বন্দর কর্তৃপক্ষ যন্ত্রের প্রতি যতটা মনোযোগী মানুষের প্রতি ততটা মনোযোগী নয়। যদিও যন্ত্র পরিচালনায় মানুষের সুস্থতা এবং কর্মক্ষমতা নিশ্চিত করা প্রধান শর্ত। সুতারাং বন্দরে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারী, প্রকৌশলীদের কর্মক্ষমতা অক্ষুন্ন রাখতে হাসপাতালের উন্নয়ণ অপরিহার্য। চবক হাসপাতালে কর্মরত ডাক্তারদের পেশাগত উন্নয়ণ ছাড়া হাসপাতালের উন্নয়ণ কখনো সম্ভব নয় বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।


চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং বড়মাপের রাজস্ব আয়ের প্রতিষ্টান। প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কল্যাণমুলক সেবা নিশ্চিত করা প্রতিষ্ঠানটির কর্তব্য। বন্দর হাসপাতালে কর্মকতা-কর্মচারীদের পাশাপাশি বন্দর এলাকায় বসবাসকারী জনসাধারণও চিকিৎসাসেবা পাওয়ার অধিকার রাখেন। চবক হাসপাতাল শুরুতে সকলের জন্য উন্মুক্ত থাকলেও বর্তমানে বন্দর কর্মকর্তা-কর্মচারী ব্যতীত বাইরের জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত নয়। একথা ভুলে গেলে চলবে না যে, বন্দরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা স্থাপন এবং রক্ষণাবেক্ষণে স্থানীয় জনগণের অনেক ত্যাগ ও সহযোগিতা রয়েছে। বন্দর হাসপাতালটিতে বন্দর কর্মকর্তা-কর্মচারী ছাড়া বাইরের জনগণের চিকিৎসা প্রাপ্তি বন্ধ করে দেয়ায় চট্টগ্রাম শহরের দক্ষিণাঞ্চলে বসবাসকারী জনগণ বর্তমানে জরুরী চিকিৎসা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে ভয়ংকরভাবে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। শহরের দক্ষিণভাগে সরকারী কোন গণহাসপাতাল কিংবা ভাল ক্লিনিক নেই যে, উক্ত এলাকার জনগণ বিপদ-আপদ, রাত-বিরাতে জরুরী চিকিৎসা নিতে পারে। সবচেয়ে ভয়ংকর তথ্য হচ্ছে, বিশাল অংকের বাজেটে পরিচালিত বন্দর হাসপাতালটিতে বন্দর এলাকায় বসবাসকারী জনগণ নয়, খোদ বন্দর কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও জরুরী চিকিৎসা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতির এই যুগে শুনতে হাস্যকর মনে হলেও সত্যি, হাসপাতালটিতে যে ডাক্তার দিয়ে ডায়াবেটিক্স চিকিৎসা প্রদান করেন একই ডাক্তার দিয়ে গাইনী, হৃদরোগসহ সকল রোগের চিকিৎসা পরিচালিত করা হয়। প্রাচীন চিকিৎসা পদ্ধতির সেই বিখ্যাত কবিরাজের মতো করে অসহায় চিকিৎসকরা এখানে পেশাগত দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। সচেতন জনগন শুনলে অত্যন্ত মর্মাহত হবেন যে, অর্থ আছে, স্থান আছে, সুযোগ আর সম্ভাবনা সবই আছে শুধুমাত্র পরিকল্পনা আর আন্তরিকতার অভাবে অবহেলিত অবস্থায় পড়ে আছে হাসপাতালটি।

বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ে কম সুযোগ আর সীমাবদ্ধতা নিয়ে পূর্ণাঙ্গ কাঠামো নিয়ে চিকিৎসাসেবা চালিয়ে যাচ্ছে চট্টগ্রাম মা-শিশু ও জেনারেল হাসপাতাল। বন্দর হাসপাতালে কর্মরত ডাক্তারদের অবস্থা বলা যায় অনেকটা “ফাইস্যা গেছি মন্‌কার চিপায়” ধরণের ত্রাহি অবস্থা। প্রতিবার বছর শুরুতে ডাক্তার নিয়োগ হয় আর অধিকাংশ ডাক্তারই নিঃশর্তে চাকুরী ছেড়ে চলে যান বছর শেষে। আবারও নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি আসে, হাসপাতালটির অবস্থা না বুঝে আবেদন করেন অসংখ্য অভিজ্ঞ বা সদ্য পাশ করা ডাক্তার। বছর জুড়ে চলতে থাকে নিয়োগ প্রক্রিয়া। নিয়োগপ্রাপ্তির বছর না ফুরাতেই তারা বুঝতে পারে পেশাগত জীবন অন্ধকার। পদায়নের সুযোগ না থাকায় সারা জীবন মেডিকেল অফিসার হিসেবেই কালাতিপাত, ফার্মেসীর দোকানদারের মতো বসে বসে ঔষধের নাম লেখা ছাড়া বাইরের চিকিৎসা জগতের কোন কিছুর সাথে তাদের যোগাযোগ করার সুযোগ থাকেনা।বন্দরের যে ধরণের সুযোগ আর অর্থ আছে তা দিয়ে প্রাইভেট পাবলিক পার্টনারশীপ ব্যবস্থায় শহরের দক্ষিণাঞ্চলের জন্য এই হাসপাতালটিকে একটি অত্যন্ত উন্নতমানের মিলিটারী হসপিটাল (সিএমএইচ) এর আদলে রূপান্তর করা সম্ভব। ইতিপূর্বে আমরা পত্র-পত্রিকার মাধ্যমে জেনেছি, বহুবার বহু আঙ্গিকে এই হাসপাতালটিকে আধুনিক যুগপোযোগী করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, কিন্তু প্রতিবারই যাচাই-বাচাই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার নামে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়া অথবা বিদেশ ভ্রমণের সুযোগ সৃষ্টি করা ছাড়া কাজের কাজ কিছুই হয়নি।

বাংলাদেশে বিশেষ করে সরকারী মেডিকেল কলেজে যে সব ছাত্র-ছাত্রী এমবিবিএস কোর্সে ভর্তি হয় তারা নিঃসন্দেহে দেশের সেরা মেধাবী ছাত্র-ছাত্রী। দেশের এই মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে পরিবার, দেশ ও জাতি অনেক কিছু আশা করেন এবং পাওয়ার অধিকারও রাখেন। যে পরিবারের একটি ছেলে কিংবা মেয়ে ডাক্তারী পড়েছেন সে পরিবারই সত্যিকারভাবে বুঝতে পারেন যে, একজন এমবিবিএস ডাক্তার তৈরীতে কী পরিমাণ কাটখড় পোড়াতে হয়। দেশের এই সম্ভবনাময় মেধাগুলোর পেশাদারিত্বের উন্নয়ণ বাধাগ্রন্থ করা, বিশেষজ্ঞ হওয়ার পথ রূদ্ধ করা দেশের জন্য কল্যাণকর নয়। এটা অনেকটা পেশাগত ডিগ্রি প্রাপ্ত এমবিবিএস ডাক্তারদের অধিকার লংঘন করার শামিল। বন্দরের পাশ্ববর্তী আগ্রাবাদ এলাকায় বেসরকারী উদ্যোগে পরিচালিত চট্টগ্রাম মা-শিশু ও জেনারেল হাসপাতাল যেভাবে সীমিত সম্পদ নিয়ে পূর্ণাঙ্গ হাসপাতাল হিসেবে জনগণের গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করেছে তা বন্দর কর্তৃপক্ষ অনুকরণ করতে পারেন। একজন এমবিবিএস পাশ ডাক্তার অবশ্যই অধিকার রাখেন; কর্ম দক্ষতা, প্রশিক্ষণ আর উচ্চতর ডিগ্রি অর্জনের মাধ্যমে ভবিষ্যতে সহকারী প্রফেসর, প্রফেসর হওয়ার মাধ্যমে নিজেকে একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তপক্ষ (চবক) দেশের এধরণের মেধাবীদের বন্দরের লজিং মাস্টারের মতো ফেলে রেখে নিতান্তই তাদের অধিকার খর্ব করছেন, পাশাপাশি দেশের মেধা সম্পদ নষ্ট করছেন - যা মোটেও কাম্য নয়।

বন্দর কর্তৃপক্ষ এই হাসপাতালের মাধ্যমে ক্ষুদ্র আকারের বিশ সিটের একটি মেডিকেল কলেজ ও নার্সিং ইনষ্টিাটউটও চালু করতে পারেন, যাতে করে আমাদের দেশের চিকিৎসক আর নার্স তৈরীর জাতীয় লক্ষ্যমাত্রা পুরণে সহায়ক হয়। বন্দরে নিয়োগকৃত ডাক্তারদের চাকুরীর বয়স এবং যোগ্যতা সাপেক্ষে প্রমোশনের স্তর সৃষ্টিকরণ, একই ডাক্তার দিয়ে যাবতীয় জটিল রোগের চিকিৎসার সনাতনী পদ্ধতি পরিহার, প্রতিটি ডাক্তারকে আলাদা বিষয়ে নিয়োজিত করে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে এফসিপিএস ও উচ্চতর প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে বিশেষজ্ঞ তৈরীর পথ সৃষ্টি করা যায়। এধরণের যুগোপযোগী পরিকল্পনা কিংবা ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে হাসপাতালটির উন্নয়ণ ঘটানো গেলে বন্দর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ও আশ-পাশের জনসাধারন যেমন সূ-চিকিৎসার সুযোগ পাবে, তেমনি দেশে সৃষ্টি হবে বিভিন্ন রোগের ভাল ভাল বিশেষজ্ঞ। বন্দর কর্তৃপক্ষ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি অনতিবিলম্বে পরিবর্তন না করলে প্রতিবছরই ডাক্তার নিয়োগ হবে আর অল্প ক’দিন পর চলে যাবে অন্যত্র। অবশ্য ডাক্তারদের এই গমনাগমনে বন্দর, দেশ কিংবা চিকিৎসা পদ্ধতির বিশাল ক্ষতি সাধিত হলেও একশ্রেনীর অসাধু দুস্কৃতিকারীর লাভ আছে বলে অনেকেই মনে করেন। বর্তমানে হাসপাতালে যে সমস্ত ডাক্তাররা কর্মরত আছেন তারা অনেকটা পিঞ্জিরাবন্দী পাখি কিংবা বন্দর কর্তৃপক্ষের জায়গীর মাস্টাররের মতো। প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ টাকা দিয়ে কেনা ঔষধগুলোর নাম লিখাই যেন দেশের এই সেরা মেধাবী মানুষগুলোর কাজ। চট্টগ্রামের সাংসদ, রাজনীতিবিদ, বন্দরের সিবিএ নেতৃবৃন্দ, নৌ-মন্ত্রী, উপদেষ্টাসহ চট্টগ্রামের সচেতন জনগণ, সাংবাদিক ভায়েরা এগিয়ে আসলে পরিবর্তন আশা করা যায়। আসুন আমরা জাতির এই মেধাবী মানুষগুলোর মেধা ধ্বংস করা পরিহার করে মেধাগুলো আরো শানিত করে জাতীয় জীবন সমৃদ্ধ করি । মেধার সন্মান আর যথোপযুক্ত ব্যবহার ছাড়া দেশে মেধার বিকাশ কখনো সম্ভব নয়। আবহাওয়া পরিবর্তন আর ওজন স্তরের ক্ষয় হওয়ায় রোগের প্রকৃতি ও জটিলতা পরিবর্তনের সাথে সাথে চিকিৎসা পদ্ধতি বিশেষায়িত করার কোন বিকল্প নেই।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ হাসপাতাল নিজেই গুরুতর অসুস্থ: জরুরী চিকিৎসা প্রয়োজন।



সুত্রঃ  http://prothom-aloblog.com/posts/55/158982(ঈষৎ সংক্ষেপিত)


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

bdnews24.com - Home

ইরান বাংলা নিউজ

বিবিসি বাংলা

দৈনিক সংগ্রাম