৩০ নভে, ২০১১

বিশ্বের সবচেয়ে বেশি দেখা ছবি-র গল্প


উপরের ছিবিটি কি চিনতে পেরেছেন? একজন সাধারণ কম্পিউটার ব্যবহারকারী হলেও এটি চিনতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। কম্পিউটার চালুর সঙ্গে সঙ্গে এ ছবিটি হয়ত হাজারবার ভেসে এসেছে আপনার ডেস্কটপে। এবার আরেকটু ভিন্ন ভাবে আসা যাক, আচ্ছা, বলতে পারেন পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি দেখা ছবি কোনটি?

হিসাব অনুযায়ী, সবচেয়ে বেশি দেখা এ ছবিটি হচ্ছে উপরের এই উইন্ডোজ এক্সপির ডিফল্ট ওয়ালপেপার, যেটি বিলিয়ন বারেরও বেশি দেখা হয়েছে। ঘাসের উপরে নীল আকাশ, আর আকাশে খন্ড খন্ড সাদামেঘ। মাটি থেকে আকাশের অদ্ভুত এক ‘কম্বিনেশন’! উন্মুক্ত মাঠে নীল রং আর উজ্জল আলোর খেলা দেখা যায় এ ছবিটিতে। উইন্ডোজ এক্সপির এ ওয়ালপেপারটি দেখে অনেকেরই ধারণা, ছবিটি গ্রাফিক্সের মাধ্যমে করা হয়েছে, কিন্তু আসল ব্যাপারটি তেমন নয়। এটি যুক্তরাষ্ট্রের নাপাভ্যালীর একটি পথের ধারে তোলা ছবি যেটি ক্যামেরাবন্দী করেছিলেন বিখ্যাত ফটোগ্রাফার চাক ওরিয়ার (চার্লস ওরিয়ার)। তার তোলা উপরের এই ছবিটি কেবল উইন্ডোজ এক্সপির ওয়ালপেপার হিসাবেই আলোচিত নয়, এর দামের হিসাবেও এটি বেশ আলোচিত। জানা যায়, সবচেয়ে বেশি দামে বিক্রি হওয়া ছবির তালিকায় এটি রয়েছে দ্বিতীয় অবস্থানে

ওরিয়ার একেবারে জাত ফটোগ্রাফার। ক্যারিয়ারের দীর্ঘ সময় কাটিয়েছেন ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক চ্যানেলে। প্রতিষ্ঠানটির প্রকাশিত ম্যাগাজিনে তিনি দীর্ঘদিন ফটোগ্রাফি করেছেন। এখানে কাজ করার সময়ই ওরিয়ারের ফটোগ্রাফি সুনাম ছড়ায় সর্বত্র। তাঁর এক্সপি ওয়ালপেপারের ছবিটি ক্যামেরাবন্দী করার কাহিনীটিও বেশ মজার। তখন সদ্য ৬০ পেরিয়েছেন। আর এ বয়সেই আবার নতুন একটি প্রেমে পড়েছেন এ জাত আলোকচিত্রী। রোদ্রোজ্জল এক দিনে নতুন প্রেমিকার সঙ্গে নিজেই গাড়ি হাকিয়ে যাচ্ছিলেন নাপা ভ্যালীর পথ দিয়ে। সঙ্গে ছিল তার অতিপ্রিয় ক্যামেরাটি। চারপাশে তখন ঝলমলে রোদ। রাস্তার দুপাশে আঙ্গুর বাগান। রাস্তার পাশেই উচু টিলা। আর টিলায় সারি সারি আঙ্গুর গাছ। টিলা তখন সবুজ ঘাসে ভরে উঠেছে। টানা রোদে অদ্ভুদ রঙ ছড়ায় এ ঘাসগুলো। আর এ রঙ চোখ এড়ায় না চাক ওরিয়ারের। গাড়ি থামিয়ে নামেন তিনি। একটানা বেশ কয়েকটি ছবি তোলেন। নিচে সবুজ ঘাস, আর আকাশে খন্ড খন্ড মেঘ।

নাপাভ্যালীর এ স্থানটি বেশ আকর্শনীয় হওয়ায় এখানে অনেক ফটোগ্রাফারই আসেন, ছবি তোলেন। তবে আকাশের রঙ আর ঘাসের এ অদ্ভুত মিল এর আগে খুঁজে পাননি কেউই। এই প্রথম চাক ওরিয়ারের ক্যামেরায় আলো আর নীলের মাঝে ঘাস আর মেঘের অদ্ভুত চিত্রটি ধরা পড়লো। ছবিটি দেখে বেশ পুলকিত হলেন ওরিয়ার, তবে তখনও তিনি ধারণা করতে পারেনি তার এই ছবিটিই ইতিহাসের একটি উজ্জল অধ্যায় হতে যাচ্ছে। এ ছবিটিই হতে যাচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি দেখা একটি ছবি। তবে একটি ভালো ছবি তুলে ফটোগ্রাফার যেমন মন্ত্রমুগ্ধের মতো তাকিয়ে থাকেন, এক্ষেত্রে অবশ্য তেমনটি হয়নি। ওরিয়ারেরর ভাষায়, ‘আসলে আমার নতুন প্রেমিকা তখন আমার সঙ্গে, ছবিটি দেখে বুঝলাম যে একেবারে অর্ডিনারি একটা ছবি এসেছে। তবে বেশিক্ষণ সেটি দেখার সুযোগ হয়নি। ক্যামেরা গুটিয়ে তড়িঘরি করে সেসময় গাড়িতে উঠি।’
ছবিটি তুলে এ নিয়ে আর ঘাটাঘাটি করা হয়নি ওরিয়ারের। এভাবেই বেশকিছুদিন পার হয়ে যায়। হয়ত ছবিটির কথা ভুলতেই বসেছিলেন তিনি। তবে না, এটির কথা আবার মনে করিয়ে দিলো তার এজেন্সি। কোথা থেকে যেন ওরিয়ারের ছবিটি দেখেছেন মাইক্রোসফট কর্মকর্তারা। আর এটি তাদের বেশ পছন্দও হয়েছে, যেটি তারা তাদের নতুন অপারেটিং সিস্টেম উইন্ডোজ এক্সপির ডিফল্ট ওয়ালপেপার করতে চায়। আর তাই মাইক্রোসফট কর্মকর্তারা এ এজেন্সির মাধ্যমেই চেয়েছেন ছবিটির মূলকপি। চুক্তি করে ছবিটির স্বত্ব কিনে নেয় মাইক্রোসফট। তবে ছবিটির জন্য ঠিক কত অর্থ পরিশোধ করা হয়েছে সেটি গোপন রাখা হয়, চুক্তিতেও স্পষ্ট বলে দেয়া হয় যে, টাকার এ অংকটি কেউই প্রকাশ করতে পারবেন না! তবে ধারণা করা হয়, এটিই হচ্ছে বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চদামে বিক্রি হওয়া ছবি।

সম্প্রতি ডেইলিমেইল এক সাক্ষাতকার নিয়েছিল চাক ওরিয়ারের। সেখানে তিনি তার এই বিখ্যাত ছবি সম্পর্কে বলেন, ছবিটি তোলার সময় একটুও ধারণা করতে পারিনি যে এটিই হতে যাচ্ছে একটি ‘আইকোনিক ফটো’। বাস্তবতা হচ্ছে, এটিই সম্ভবত বিশ্বের সবচেয়ে পরিচিত ছবি। এটা যদি বাংলাদেশের কোনো এক গ্রামে নিয়ে গিয়ে দেখানো হয় তবে সেও যেমন চিনতে পারবে, তেমনি চীনের ব্যস্ত রাস্তায় যদি কাউকে ছবিটি দেখিয়ে জিজ্ঞাসা করা এটি কিসের ছবি, সেও এ সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা দিতে পারবে।’ (স্টোরি টা পড়ে আমার খুব ভালো লাগলো যে চাক ওরিয়ার বাংলাদেশের কথা বললেন!

বিশ্বের কোটি উইন্ডোজ এক্সপি ব্যবহারকারী তাদের কম্পিউটার চালুর সঙ্গে সঙ্গে চাক ওরিয়ারের তোলা এ ছবিটি দেখতে পান। তবে চাক নিজে তার কম্পিউটার চালুর পর এ ছবিটি দেখার সুযোগ পান না, কারণ তিনি ব্যবহার করেন অ্যাপলের ম্যাক, যেটি অ্যাপলের নিজস্ব অপারেটিং সিস্টেমে চলে!

http://www.somewhereinblog.net/blog/asadrasel/29488271
বিস্তারিত পড়ুন ... »

দুনিয়া কাঁপানো ছবিগুলো

একটা ছবি হাজার শব্দের চেয়ে বেশি শক্তিশালী। কিছু ছবি মানুষের ইতিহাস বদলায়, কিছু ছবি  মানুষকে স্বপ্ন দেখায় আর কিছু ছবি মানুষকে করে বাকরুদ্ধ।
এমনই কিছু ছবি:
Dead on the Beach 1943

ঘরে বসে কখনো বোঝা যায় না, যুদ্ধ আসলে কি? সাগর তীরে আনন্দের বদলে লাশের সারি নিয়ে আসতে পারে যুদ্ধ। ২০শে সেপ্টেম্বর, ১৯৪৩-এ তোলা ছবি। পাপুয়া নিউ গিনিতে সমুদ্রতীরে মৃত অবস্থায় পরে থাকা আমেরিকান সৈন্যরা।
Biafra 1969

পূর্ব নাইজেরিয়ার লেগবসরা ১৯৬৭ তে যখন নিজেদের স্বাধীন বলে ঘোষণা করে, তাদের গঠিত দেশ বায়াফরা-কে নাইজেরিয়া সমগ্র পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়। তিন বছর চলাকালীন যুদ্ধে দশ লাখ মানুষ মারা যায়। প্রোটিনের অভাবে বাচ্চারা kwashiorkor নামক রোগে ভুগতে থাকে, যে রোগে তাদের পেশি ক্ষয় হয়ে যেতে থাকে। একটি ক্যাম্পেই এমন ৯০০ শিশু দেখতে পান ফটোগ্রাফার। এই ছবি প্রকাশের পর সমগ্র বিশ্ব এগিয়ে আসে বায়াফরা-কে সাহায্য করার জন্য।
Nagasaki 1945

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে একটি পারমানবিক বোমা দিয়ে এক মূহুর্তে জাপানের নাগাসাকি শহরের ১৫০০০০ মানুষ মেরে ফেলার সেই মূহুর্ত। ‘মাশরুম ক্লাউড’ নামে পরিচিত বোমা থেকে তৈরী ধোয়ার ছবি, যেটি বিস্ফোরিত হয়, ভূমি থেকে ৫০০ মিটার উপরে।
Breaker Boys1910

সেই বিশ লাখ শিশুশ্রমিকের অংশবিশেষের ছবি যারা ১৯১০-এ আমেরিকায় শিশুশ্রমিকের কাজ করতো। ছবিটার শিশুদের কাজ ছিলো কয়লা থেকে স্লেট আলাদা করা। তাদের নিস্পৃহ চেহারা, চোখে জীবনের প্রতি বিতৃষ্ণা কাঁপিয়ে দেয় মানুষকে। ১৯১০-এ আমেরিকায় শিশুশ্রম বন্ধের আইন তৈরী হয়।
Earthrise 1968

১৯৬৮ সালে চাঁদ থেকে তোলা পৃথিবীর ছবিটি হঠাৎ মনে করিয়ে দেয়, আমরাও এ মহাবিশ্বেরই একটি অংশ। খুব ক্ষুদ্র একটি অংশ!
Execution of a Viet Cong Guerrilla 1968

দক্ষিণ ভিয়েতনামের পুলিশ ক্যাপ্টেন Nguyen Ngoc Loan এক বন্দীকে গুলি করে হত্যা করার মূহুর্তের ছবি। ছবিটি ভিয়েতনামের দুই অংশের যুদ্ধ থামাতে ব্যাপক মানব সমর্থন গড়ে তোলে।
How Life Begins 1965

১৯৬৫ তে প্রকাশিত মানবদেহের ভেতরে মানব শিশুর প্রথম ছবি।
Triangle Shirtwaist Company Fire 1911

কোম্পানির মালিক শ্রমিকরা যেনো কিছু চুরি করে পালাতে না পারে, সে জন্য দরজা তালা দেয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন। ১৯১১ এর ২৫শে মার্চ ফ্যাক্টরিতে আগুন লাগলে শ্রমিকদের বের হবার কোন রাস্তা থাকে না। ৩০ মিনিটে মারা যায় ১৪৬ জন। কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তার দাবিতে বিপুল সমর্থন তৈরী করে এই ছবি।
Flight 1903

আকাশে উড়ে বেড়ানোর মানুষের বহুকালের স্বপ্ন পূরণের ছবি। ১৯০৩ সালে রাইট ভাইদের তৈরী প্লেন।
First Human X-ray 1896

উইলিয়াম রন্টজেনের স্ত্রী-এর হাতের এক্সরে এর ছবি। পৃথিবীর প্রথম এক্সরে।
Migrant Mother 1936

মন্দা-র সময় নিজের ৭ সন্তানকে খাবার কিনে দেবার জন্য শেষ সম্বল তাবু আর গাড়ির টায়ারগুলোও বিক্রি করে দেন এই মা। অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত এক মা।
The Falling Man 2001

নিজের জীবন যে মানুষের কত প্রিয় তা এই ছবি থেকে দেখা যায়। ওয়ার্ড ট্রেড সেন্টারে হামলার পর ওই ভবনে থাকা ব্যক্তি নামার কোন পথ না পেয়ে ঝাঁপ দেন ভবনের উপর থেকে। কোন অলৌকিক উপায়ে বেঁচে থাকার আশায় হয়তো………
Tetons and the Snake River; Ansel Adams, 1942

অ্যানসেল অ্যাডামস এর এই ছবিটিকে বলা হয় ‘ন্যাচার ফটোগ্রাফি’র বিখ্যাত ছবিগুলোর একটি। ১৯৪২ সালে তোলা ছবিটি জলবায়ু সংরক্ষণ আন্দোলনকে ত্বরান্বিত করে। মানুষের সৌন্দর্যবোধকে নাড়িয়ে যায় অবলীলায়। ভয়েজার নভোযান-এ করে যে ১১৫টি ছবি মহাশুন্যে পাঠানো হয়, তার মধ্যে এটি অন্যতম।
Afghan Girl; Steve McCurry, 1984

আফগানিস্থানের যুদ্ধ কাকে কি দিয়েছে তা নিয়ে অনেক তর্ক হতে পারে, কিন্তু সাধারণ মানুষের কাছ থেকে যে অনেক কিছু কেড়ে নিয়েছে তা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। রিফিউজি ক্যাম্পের এক কিশোরী মেয়ের চোখের ভয়, ঘৃণা, চিন্তা, কষ্ট সবকিছু কারও চিন্তাশক্তি এলোমেলো করে দিতে যথেষ্ট।
Starving Child Vulture, 1993

পুলিৎজার পুরস্কার জেতা কেভিন কার্টারের সেই বিখ্যাত ছবি! অপুষ্টিতে চলতে পারার শক্তি হারানো এক সুদানি শিশুকে অনুসরণ করছে একটা শকুন। অপেক্ষা করছে শিশুর মৃত্যুর। শেষ পর্যন্ত বাচ্চাটির কী হয়েছিল কেউ না জানলেও এ ছবি তোলার তিন মাসের মাথায় আত্নহত্যা করেন কার্টার। আফ্রিকার দারিদ্র আর যুদ্ধের নৃশংসতা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় এ ছবি।
The Power of One, 2006

একজন অভিবাসী মহিলা ঠেকিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছেন ইসরাইলী সিকিউরিটি অফিসারদের। লড়াই চালিয়ে যাবার অদম্য ইচ্ছা প্রকাশের এক ছবি।
execution in Kurdish Iran, 1979

১৯৭৯-তে ইরানে কুর্দিদের হত্যার নির্মম দলিল এই ছবি। ছবিটি প্রকাশের সময় ফটোগ্রাফারের নাম গোপন রাখা হয় নিরাপত্তার জন্য। ২৭ বছর পর, ফটোগ্রাফার জাহাঙ্গীর রামজী নাম প্রকাশিত হয়।
The challenger space shuttle disaster, 1986

স্পেস শাটল ‘চ্যালেঞ্জার’ ১৯৮৬ সালে নিক্ষেপনের ৭৩ সেকেন্ডের মাথায় বিস্ফোরিত হয় আটলান্টিক মহাসাগরের উপর। ৭ জন অভিযাত্রীর সবাই নিহত হন। মহাকাশযাত্রার নিরাপত্তার বিষয়টি ব্যাপকভাবে তুলে আনে এ দূর্ঘটনা।
Stopping Time, 1964

বিখ্যাত ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয় এম.আই.টি.  এর প্রফেসর হ্যারল্ড এডগার্টনের গবেষণার কাজে তোলা একটি ছবি, যা বিখ্যাত করে তোলে ‘হাই স্পিড ফটোগ্রাফি’।
First Black Student, 1957

যে কয়জন মানুষ প্রথম গায়ের রঙ এর উপর ভিত্তি করা শিক্ষাব্যবস্থাকে ভেঙে প্রথম এসেছিলেন স্কুলে তার একজন ডরোথি কাউন্টস। হ্যারী হার্ডিং হাই স্কুলে তার প্রথম দিন কেমন গিয়েছিল, তার পিছনে অঙ্গভঙ্গী করা মানুষগুলোই তার প্রমাণ। চারদিনের মাথায় স্কুল থেকে তার পরিবার তাকে অপসারণ করে নেয়। কিন্তু, গায়ের রং-কে শিক্ষা পাওয়ায় বাঁধা হতে না দেওয়ার চেষ্টার ছবি এটি।
Man walks on the Moon, 1969

নীল আর্মস্ট্রং এর তোলা এডুইন অলড্রিনের চাঁদে হাঁটার ছবি। মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়, এই ছবি তার প্রতীক।
Palestinian father shields son, 2000





ইসরাইল এবং ফিলিস্তিনের মধ্যের যুদ্ধ প্রতিনিয়ত কেড়ে নেয় জীবন। দুই পক্ষের গোলাগুলির মধ্যে পরস্পরকে আঁকড়ে ধরে বেঁচে থাকার কী তীব্র চেষ্টা বাবা এবং ছেলের। বাবা জামাল আল দুররাহ এবং ছেলে মুহাম্মাদ আল দুররাহ এর জীবনের সমাপ্তিও ঘটে নীরবেই। এমন হাজারো গল্পের ভিড় থেকেও শান্তি বেরিয়ে আসে না।
বিস্তারিত পড়ুন ... »

ঢাকার মজার কিছু খাবার দোকান এবং ঠিকানা


আমি একজন ভোজনরসিক মানুষ। আমি খেতে খুবই পছন্দ করি। সুযোগ পেলেই আমি ভালো কিছু খাবারের জন্য বেরিয়ে পড়ি। সেই সুবাদে আমি ঢাকা শহরের এমন কিছু দোকানের মুখরোচক খাবার খেয়েছি, যা খেলে যে কোন মানুষের বার বার সেই খাবার খাওয়ার লোভ আসতে বাধ্য। এখন আমি আমার ব্লগার বন্ধুদের কাছে এমন কয়েকটি বাংলা খাবারের দোকানের খাবার এর বর্ণনা করছি, যে সব দোকানে সবারই একবার করে হলেও যাওয়া উচিত মজাদার খাবারের আসল মজা বোঝার জন্য। আমার বিশ্বাস এই দোকানগুলোর আমার উল্লেখিত খাবারগুলো একবার খেলে বারবার খেতে যেতেই হবে…………………………………..
১. “নান্না বিরিয়ানি” এর নাম শুনেনি এমন মানুষ খুব কমই আছে। এই দোকানটির মতো “মোরগ-পোলাও” বাংলাদেশের আর কোন দোকান বানাতে পারে কি না ?? আমি বলতে পারবো না। এই দোকানটির “মোরগ-পোলাও” এর যে স্বাদ তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। অনাসায়ে যে কেও একবৈঠকে দুটি “মোরগ-পোলাও” শেষ করে ফেলতে পারবে। “মোরগ-পোলাও” এর ঝোলের যেই স্বাদ, তা এককথায় অমৃত এর কাছাকাছি। সেই সাথে এই দোকানের বোরহানীটাও মজার।
বর্তমান দাম:- মোরগ-পোলাও = ৮০ টাকা, বোরহানী = ১৫ টাকা।
ঠিকানা:- এই মোট ৪টি শাখা রয়েছে। ৪টি শাখাই পুরনো ঢাকায় অবস্হিত। কিন্তু প্রথম এবং মেইন দোকানটির সাথে এর শাখাগুলোর রান্না এর কিছু পার্থক্য আছে। তাই যারা আসল স্বাদ নিতে চান তারা চলে যান এর প্রথম শাখায়। দোকানটি বেচারাম দেউরীতে অবস্হিত। যেতে হলে যাবেন তারা মসজিদে। সেখান থেকে “নান্না বিরিয়ানি” দেখা যায়। তারা মসজিদে সরাসরি যেতে না পারলে চলে যান কেন্দ্রীয় কারাগারে। সেখান থেকে তারা মসজিদে যেতে ১৫ টাকা রিকশা ভাড়া লাগে।
২. খুবই খুবই মজাদার “কাচ্চি বিরিয়ানী” খেতে চান ? ভুলে যান দামী ফখরুদ্দীন বিরিয়ানী অথবা ষ্টার বিরিয়ানী এর কথা। চলে যান “সুনামী রেস্তোরা”য়। ভাই বিশ্বাস করুন এত মজার “কাচ্চি বিরিয়ানী” আর কোথাও পাবেন কি না ? জানি না। সেরকম একটা “কাচ্চি বিরিয়ানী” পাওয়া যায় এই দোকানে।
বর্তমান দাম:- কাচ্চি বিরিয়ানী = ৮৫ টাকা, বোরহানী ফ্রী।
ঠিকানা:- ধানমন্ডির ঝিগাতলা বাসষ্ট্যান্ড এর বিপরীতে এই রেস্তোরা। ধানমন্ডির ঝিগাতলা বাসষ্ট্যান্ড এ গিয়ে কাউকে বললেই দেখিয়ে দিবে।
৩. “ভোলা ভাই বিরিয়ানি” এই দোকানটির গরুর চাপ এর বিরিয়ানি একবার হলেও খেয়ে দেখবেন। হালকা ঝাল দিয়ে বানানো এই বিরিয়ানী আপনার অবশ্যই ভালো লাগবে।
বর্তমান দাম:- গরুর চাপ = ৭৫ টাকা, বোরহানী = ১৫ টাকা।
ঠিকানা:- প্রথমে যাবেন খিঁলগাও রেলগেটে। সেখান থেকে খিঁলগাও-গোড়ান এর দিকে যে রাস্তা নেমে গেছে, সেই রাস্তা দিয়ে আস্তে আস্তে ৪-৫ মিনিট হাঁটলেই হাতের বামে দোকানটি দেখতে পাবেন।
৪. “মুক্তা বিরিয়ানি” এই দোকানটির গরুর চাপ এর বিরিয়ানি কিন্তু খিঁলগাও এলাকায় খুবই বিখ্যাত। এই দোকানের গরুর চাপ এর প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো এর আগুন ঝাল এবং মসলার স্বাদ। আপনাদের ভালো লাগবে আশা করি।
বর্তমান দাম:- গরুর চাপ = ৭০ টাকা, বোরহানী = ১০ টাকা।
ঠিকানা:- গোরান টেম্পুস্ট্যান্ড এর আগে হাড়ভাঙ্গা রোডে।
৫. ভূনা খিচুরী খেতে অনেকেই ভালোবাসেন। যদি আপনি ঢাকা শহরের সবচেয়ে মজার ভূনা খিচুরী খেতে চান, তাহলে চলে যান “ঘরোয়া হোটেল” এ। এখানে আপনি ঢাকা শহরের সবচেয়ে বিখ্যাত এবং মজাদার ভূনা খিচুরী পাবেন। দামটা একটু বেশী মনে হলেও খাওয়ার পর এই দাম কিছুই মনে হবে না।
বর্তমান দাম:- ভূনা খিচুরী = ১২০ টাকা, বোরহানী = ২০ টাকা।
ঠিকানা:- শাপলা চত্বর থেকে মধুমিতা সিনেমা হল যাওয়ার সময় মধুমিতা সিনেমা হল এর একটু আগে।
ভালো থাকবেন। আপনার খোজেঁ অন্য কোন মজার খাবার দোকানের সন্ধান থাকলে অবশ্যই জানাবেন।
part 2

বেশ কয়েকদিন আগে ঢাকার বিখ্যাত এবং মজাদার খাবারের কিছু দোকান নিয়ে একটা পোষ্ট দিয়েছিলাম। অনেক ব্লগার ভাইয়া-আপুরা সেই পোষ্টে আরো নানা খাবারের দোকান এর খোঁজ দিয়েছিলেন। এমনকি ঢাকার বাইরের অনেক খাবারের দোকান সম্পর্কেও অনেকে লিখেছিলেন। সব মিলিয়ে অনেক বড় লিস্ট হয়েছে। তাই ভাবলাম সবাই যে যে খাবারের সন্ধান দিলেন তা এক করে ফেললেই তো পারি। এতে আমার নিজের তো বটেই, আমার মতো অনেক ভোজন রসিকদের উপকার। অনেকটা “ বাংলার মিনি ফুড ডিকশনারী ” টাইপের। কাজটি করেই ফেললাম। স্বীকার করছি ঢাকার বাইরের যে খাবারের সন্ধান দেয়া আছে সংখ্যাতে তা অত্যন্ত হাস্যকর। ঢাকার বাইরে মোট ৬৩টি জেলা রয়েছে। সব জেলাতেই রয়েছে নিজস্ব মজার এবং বিখ্যাত খাবার। কিন্তু সেসবের সন্ধান শুধুমাত্র নিজ নিজ এলাকার বাসিন্দারাই দিতে পারেন। যাই হোক এখানে আমার সেই পোষ্টে যত খাবারের সন্ধানসহ লোকেশন দেওয়া হয়েছিলো তা দেয়া আছে। বিশাল বড় তালিকা। আমি তো খুশিতে বাক বাকুম। দেখুন কেমন লাগে……….
ঢাকার মধ্যের খাবার……………..
১. বেচারাম দেউরীতে অবস্হিত নান্না বিরিয়ানি এর মোরগ-পোলাও
২. ঝিগাতলার সুনামী রেস্তোরা এর কাচ্চি বিরিয়ানী
৩. খিঁলগাও এর ভোলা ভাই বিরিয়ানী এর গরুর চাপ এবং মুক্তা বিরিয়ানী এর গরুর চাপ, খাসীর চাপ এবং ফুল কবুতর
৪. মতিঝিলের ঘরোয়া হোটেল এবং হীরাঝীলের ভূনা খিচুড়ী
৫. হোটেল আল-রাজ্জাকের কাচ্চি+গ্লাসি
৬. লালমাটিয়ার স্বাদ এর তেহারী
৭. নবাবপুর রোডে হোটেল স্টার এর খাসীর লেকুশ, চিংড়ি ,ফালুদা
৮. নয়াপল্টনে হোটেল ভিক্টোরীতে ৭০টি আইটেমের বুফে
৯. হাতিরপুল মোড়ে হেরিটেজ এর শর্মা
১০. শ্যামলী রিং রোডের আল-মাহবুব রেস্তোরার গ্রীল চিকেন
১১. মোহাম্মদপুর জেনেভা/বিহারী ক্যাম্পের গরু ও খাশির চাপ
১২. মোহাম্মদপুর টাউন হল বাজারের সামনের বিহারী ক্যাম্পের “মান্জারের পুরি”
১৩. চকবাজারের শাহ সাহেবের বিরিয়ানী
১৪. মিরপুর-১০-এর শওকতের কাবাব
১৫. নারিন্দার শাহ সাহেবের ঝুনার বিরিয়ানী
১৬. ইংলিশ রোডের মানিকের নাস্তা
১৭. গুলশানের কস্তুরির সরমা
১৮. সোবহানবাগের প্রিন্স রেস্টুরেন্ট এর কাকড়া
১৯. সাইন্স-ল্যাবের ছায়ানীড়ের গ্রীল-চিকেন
২০. নাজিরা বাজারের হাজীর বিরিয়ানী
২১. জেলখানা গেটের পাশে হোটেল নিরবের ব্রেন ফ্রাই
২২. নয়া বাজারের করিমের বিরিয়ানী
২৩. হাজি বিরিয়ানী এর উল্টা দিকের হানিফের বিরিয়ানী
২৪. লালবাগের ভাটের মসজিদের কাবাব বন
২৫. মোহাম্মদপুরে সেন্ট জোসেফ স্কুলের গেটে এক মামার চানাচুর মাখা
২৬. বংশালের শমসের আলীর ভূনা খিচুড়ী
২৭. খিলগাঁও বাজারের উল্টো পাশে আল রহমানিয়ার গ্রীল চিকেন আর তেহারী
২৮. মতিঝিল সিটি সেন্টারের পিছনের বালুর মাঠের পিছনের মামার খিচুড়ী
২৯. চানখারপুলের নীরব হোটেলের ভুনা গরু আর ভর্তার সাথে ভাত
৩০. ধানমন্ডী লায়লাতির খাসির ভুনা খিচুড়ী
৩১. হোসনী দালান রোডে রাতের বেলার পরটা আর কলিজা ভাজি
৩২. নাজিরা বাজার মোড়ে বিসমিল্লার বটি কাবাব আর গুরদার
৩৩. পুরানা পল্টনে খানা-বাসমতির চাইনিজ প্যাকেজ
৩৪. বনানীর বুমারস রেস্টুরেন্টের বুফে প্যাকেজ
৩৫. ধানমন্ডির কড়াই গোশত এর ইলিশ সস
৩৬. গুলশান ২ এর খাজানার মাটন দম বিরিয়ানী এবং হাইদ্রাবাদী বিরিয়ানী
৩৭. উত্তরার একুশে রেস্তোরার গ্রীল চিকেন
৩৮. ধানমন্ডি/বনানীর স্টার হোটেলের কাচ্চি এবং কাবাব
৩৯. মৌচাকের স্বাদ রেস্তোরার ভাতের সাথে ৩৬ রকমের ভর্তা
৪০. সাইন্স ল্যাবে মালঞ্চ রেস্তোরার কাচ্চি বিরিয়ানী
ঢাকার বাইরের খাবার…….
১. স্পেশাল শাক ভাজি + ভেটকি মাছ–হোটেল সাজনা, আগ্রাবাদ, চট্টগ্রাম
২. করাই মাটন+সাতকরা দিয়ে গরুর মাংস, কাবাব এবং নান, হাইদ্রাবাদী বিরিয়ানী-হোটেল উন্দাল, পূর্ব জিন্দাবাজার, সিলেট
৩. কালাই রুটি– কোর্টের সামনে, রাজশাহী
৪. রুইমাছ ভাজি–কস্তুরি হোটেল, খুলনা
৫. মামুনের চাপ/জনি কাবাব এণ্ড চাপ–চার খাম্বার মোর, যশোর
৬. খুলনার হারুন ভাইয়ের ইলিশ ভাজা
৭. কক্সবাজারের পৌশির ভর্তা আইটেম, নিরিবিলির খিচুড়ি
৮. কলিজার সিঙ্গারা ও খাসির সমুচা—সাহেব বাজার, রাজশাহী
বিঃদ্রঃ = সবগুলোর মধ্যে সেরা খাবার……..
* মায়ের হাতের রান্না করা যেকোন খাবার *
ভালো থাকবেন। আপনার কোন মতামত থাকলে জানাবেন।

http://www.somewhereinblog.net/blog/nmrobin1988/29228531
বিস্তারিত পড়ুন ... »

জার্মানির গোয়েন্দা বিমান ‘ইউরো হক্’

গোয়েন্দা বিমান ব্যবহারে পিছিয়ে থাকতে রাজি নয় জার্মানি৷ তাই গত অক্টোবরে জার্মান বিমান বাহিনী প্রদর্শন করলো নতুন এক গোয়েন্দা বিমান, ইউরো হক্৷ অত্যাধুনিক প্রযুক্তির এই মনুষ্যবিহীন যানটি একনাগারে চলতে পারে ত্রিশ ঘণ্টা৷


দীর্ঘ দশ বছর ধরে পরিকল্পনা এবং উন্নয়নকাজ শেষে জনসমক্ষে প্রদর্শন করা হয় ‘ইউরো হক্'৷ এই গোয়েন্দা বিমানের পাইলট থাকবেন ভূমিতে৷ জার্মানির কোন এক বিমান ঘাঁটিতে বসে কম্পিউটার গেমের মতই নিয়ন্ত্রণ করবেন তাঁর বিমান, যেটি কিনা ভূপৃষ্ঠ থেকে ষাট হাজার ফুট উঁচুতে উড়তে সক্ষম৷ কোন রকম বিরতি বা জ্বালানি ছাড়াই বার্লিন থেকে টোকিও পর্যন্ত ঘুরে আসতে পারে এই বিমান৷ অবশ্য শুধু ঘোরাঘুরি এই বিমানের কর্ম নয়৷ ময়লা পরিষ্কারের যন্ত্র ‘ভ্যাকুয়াম ক্লিনার'এর মতই কাঙ্খিত লক্ষ্যের সব তথ্য সংগ্রহে অত্যন্ত পারদর্শী ইউরো হক্৷ তথ্য বলতে কোন শত্রুঘাঁটির ছবি, ভিডিও ফুটেজ যেমন সংগ্রহ করবে আকাশের এই গোয়েন্দা, তেমনি কাঙ্খিত এলাকার টেলিফোন কল, মুঠোফোনে দেয়া ক্ষুদেবার্তা, টেলিভিশন ও রেডিওতে প্রচারিত অনুষ্ঠান - সবই একেবারে ছেঁকে নেবে এটি৷একইসঙ্গে সেসব তথ্য পাঠিয়ে দেবে ভূমির নিয়ন্ত্রণ কক্ষে৷চালকবিহীন মার্কিন ড্রোন বিমানচালকবিহীন মার্কিন ড্রোন বিমান
২০১২ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে কাজে নামতে পারে ইউরো হক্৷ ইতিমধ্যে এটি নিয়ে বিস্তর পরীক্ষানিরীক্ষা হয়েছে৷ জার্মান বিমান বাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল হোলগার নয়মান এই প্রসঙ্গে জার্মান সাপ্তাহিক ডেয়ার স্পিগেলকে জানান, মনুষ্যবিহীন এই ড্রোন বিমানটি অনেকটাই মার্কিন গোয়েন্দা বিমানের মত, যেগুলো এক দশক আগেই সেদেশ ব্যবহার করতে শুরু করেছিল৷
ইউরো হক্ দেখতে মার্কিন গোয়েন্দা বিমানগুলোর মত হলেও প্রযুক্তিগত দিকে থেকে অনেক ব্যবধান রয়েছে৷ এই বিমানগুলোতে জার্মানির তৈরি সেন্সর এবং নজরদারি ব্যবস্থা যোগ করা হয়েছে৷ একটু আগেই বলেছি, ভূপৃষ্ঠ থেকে ষাট হাজার ফুট উপর দিয়ে চলতে সক্ষম এই গোয়েন্দা বিমান৷ ফলে এটি যাত্রাবাহী বাণিজ্যিক বিমানগুলোর জন্য কোন বাড়তি বিড়ম্বনাও তৈরি করবে না৷ কেননা, বাণিজ্যিক বিমানগুলো সাধারণত ভূপৃষ্ঠ থেকে ত্রিশ থেকে চল্লিশ হাজার ফুট উপরে উড়তে সক্ষম৷
এই জার্মান ড্রোন বিমানের কারিগরি দিকে খানিকটা নজর বোলানো যাক৷ স্পিগেল অনলাইন এর তথ্য অনুযায়ী, মনুষ্যবিহীন যানটির ওজন মাত্র ১৫ টন৷ এটি তৈরি করা হয়েছে কার্বন ফাইবার দিয়ে৷ লম্বায় বিমানটি ১৪.৫ মিটার তবে পাখাসহ এটি ৪০ মিটার চওড়া৷ একনাগাড়ের ২৫,০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত উড়তে সক্ষম এই ড্রোন৷ এই ক্ষমতা ব্যবহার করে আফগানিস্তানের মত সংঘাতপ্রবণ এলাকা অনায়াসে পর্যবেক্ষণ করে জার্মানিতে ফিরে আসতে পারবে ইউরো হক্৷ আরো যে বিষয়টি উল্লেখযোগ্য সেটি হচ্ছে, ইউরো হক্'এ ব্যবহার করা হচ্ছে অত্যন্ত উচ্চক্ষমতার সেন্সর৷ ফলে মেঘাচ্ছন্ন আকাশে কিংবা বালুঝড়ের মধ্যেও দিব্যি নজরদারির কাজ করতে সক্ষম হবে এটি৷
জার্মানির জন্য এবং জার্মান প্রযুক্তি ব্যবহার করা হলেও ইউরো হক্ তৈরি করা হয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায়৷ ইউরোপীয়ান অ্যারোনটিক ডিফেন্স ও স্পেস কোম্পানি ইএডিএস এবং একটি মার্কিন প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে গোয়েন্দা বিমানের ইউরোপীয় সংস্করণ তৈরি করেছে৷ চলতি বছরের জুলাই মাসে ‘ইউরো হক্' এর একটি নমুনা বিমান ১০,০০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে জার্মানির ম্যানশিং বিমান ঘাঁটিতে পৌঁছায়৷ মার্কিন এবং ইউরোপীয় বিশেষজ্ঞরা এই উড়ালের গতিপথ নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করেন৷
আগামী গ্রীষ্মে কাজ শুরু করতে প্রস্তুত ইউরো হক্৷ ইতিমধ্যে এগারো জন জার্মান পাইলটকে এই ড্রোন চালানোর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে৷ আপাতত পাঁচটি ইউরো হক্ ব্যবহারের পরিকল্পনা করছে বুন্ডেসভ্যার অর্থাৎ জার্মান সশস্ত্র বাহিনী৷ নজরদারির কাজেই মূলত এসব বিমান ব্যবহার করা হবে৷

http://www.dw-world.de/dw/article/0,,15561449,00.html
বিস্তারিত পড়ুন ... »

সত্যজিতের ‘ফেলুদা’ সমগ্র : এখন পর্যন্ত প্রকাশিত সকল সিনেমা, ইবুক,কমিকস্‌, অডিও নাটক এর মেগা কালেকশন


অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় কেউ সত্যজিতের ফেলুদা পড়েনি এমনটা কখনো শুনা যায় না, কি নেই এতে…রহস্য, অ্যাডভেঞ্চার, সাসপেন্স সহ আরও অনেক কিছু। বাংলার এই সেরা গোয়েন্দা কাহিনীর মোট ৩৫ টি গল্প আছে, প্রতিটি গল্প পড়ার সময় যেন একধরনের থ্রিলিং তৈরী হয়। এই গল্প গুলো নিয়ে এখন পর্যন্ত সাতটি সিনেমা তৈরী হয়েছে, এছাড়া রেডিও মিরচী তে এর কিছু গল্প নিয়ে অডিও নাটক হয়েছে। ওয়েব জগতে পাওয়া সকল ফেলুদার ইবুক, কমিকস্‌, নাটক, অডিও নাটকের লিংক দিয়ে দিলাম, তো দেরী না করে ডাউনলোড শুরু করুন B-)
ফেলুদা’র গোয়েন্দাদিরি :
ইবুক 582 KB
অডিও নাটক 54MB
বাদশাহী আংটি :
ইবুক 5.76 MB
শেয়াল-দেবতা রহস্য :
কমিকস্‌ ইবুক 8.6 MB
অডিও নাটক 58.3 MB
গ্যাংটকে গন্ডোগোল :
কমিকস্‌ ইবুক 15 MB
সোনার কেল্লা :
সিনেমা (৪ পার্ট ) 777 MB
বাক্স রহস্য :
ইবুক 3.722 MB
সিনেমা :
পার্ট ১
পার্ট ২
পার্ট ৩
পার্ট ৪
পার্ট ৫
পার্ট ৬
পার্ট ৭
পার্ট ৮ ( 700 MB )
সমাদ্দারের চাবি :
অডিও নাটক 65.56 MB
কৈলাসে কেলেঙ্কারি :
সিনেমা :
পার্ট ১
পার্ট ২
পার্ট ৩
পার্ট ৪
পার্ট ৫ ( 700 MB)
রয়েল বেঙ্গল রহস্য :
ইবুক 4.4 MB
অডিও নাটক 43.48 MB
জয় বাবা ফেলুনাথ :
ইবুক 1.77 MB
সিনেমা ( 8 part) 771 MB
ঘুরঘুটিয়ার ঘটনা :
ইবুক 1.51 MB
অডিও নাটক 52.23 MB
বোম্বাইয়ের বোম্বেটে :
সিনেমা :
পার্ট ১
পার্ট ২
পার্ট ৩ 450 MB
গোঁসাইপুর সরগরম :
কমিকস্‌ ইবুক 10.49 MB
গোরস্থানে সাবধান :
সিনেমা :
পার্ট ১
পার্ট ২ 350 MB
গোলকধাম রহস্য :
ইবুক 1.68 MB
অডিও নাটক 84.07 MB
নেপোলিয়নের চিঠি :
কমিকস্‌ ইবুক 13.43 MB
টিনটোরেটোর যীশু :
সিনেমা 700 MB
জাহাঙ্গীরের স্বর্ণমুদ্রা :
কমিকস্‌ ইবুক 10 MB
অডিও নাটক 61.53 MB
এবার কান্ড কেদারনাথে :
কমিকস্‌ ইবুক 4.73 MB
শকুন্তলার কন্ঠাহার :
ইবুক :
পার্ট ১ 1.19 MB
পার্ট ২ 2.71 MB
ডা: মুনসীর ডায়রি :
অডিও নাটক 68.08 MB
সিনেমা 357 MB
লন্ডনে ফেলুদা :
ইবুক 2.36 MB
রবার্টসনের রুবি :
কমিকস্‌ ইবুক 25.34 MB
(ছিন্নমস্তার অভিশাপ + সোনার কেল্লা + ডা: মুনসীর ডায়রি) ইবুক 25.931 MB
অসমাপ্ত ফেলুদা ইবুক 923 KB
(সব ফেলুদা সিনেমা একসাথে) টরেন্ট 5.18 GB
এখানে দেওয়া সকল লিংক নেট থেকে সংগ্রহিত, কোন লিংকে সমস্যা হলে জানাবেন।
হ্যাপ্পী ডাউনলোডি





http://www.somewhereinblog.net/blog/manob_shontan/29447909
বিস্তারিত পড়ুন ... »

২০ নভে, ২০১১

প্রযুক্তির টাইম মেশিন : সিডি বা কমপ্যাক্ট ডিস্ক

বর্তমানে আমরা সিডি অনেক কাজে ব্যবহার করি। কিন্তু পূর্বে সিডি শুধু গান শুনার কাজে ব্যবহার করা হতো। অনেক আগে গান শুনার জন্য প্রধান মাধ্যম ছিল গ্রামোফোন বা কলের গান(vinyl record)। সেই বড় আকারের থালার মত ক্যাসেট কে কিভাবে আরও উন্নত করে আকারে ছোট করবে তা নিয়ে গবেষণা করতো অনেক গবেষকরা। সেই চেষ্টায় আজকের এই সিডি বা কমপ্যাক্ট ডিস্ক(Compact Disk)। আসুন জেনে নেই এই সিডি র জন্ম ইতিহাস ও পথচলার গল্প।

১৯৭০ সালে ফিলিপস কোম্পানি ALP (Audio Long Play) অডিও ডিস্ক সিস্টেম নিয়ে কাজ শুরু করে। এই প্রোজেক্ট এর মূল উদ্দেশ্য ছিল লেজার টেকনোলজি ব্যবহার করে ভিনাইল রেকর্ডের (vinyl record) প্রতিদ্বন্দ্বী কিছু উদ্ভাবন করা।

ফিলিপসের অডিও ডিভিশনের পরিচালক লু অটেন্স সর্বপ্রথম পরামর্শ দেন, এক ঘণ্টার মিউজিক সম্বলিত ALP ডিস্ক হবে প্রচলিত ভিনাইল রেকর্ডের চেয়ে ছোট।

প্রথমে ভাবা হয়েছিল এই নতুন ফরম্যাটটির ব্যাসার্ধ হবে ১০ সেন্টিমিটার। ১৯৭৭ সালে ফিলিপস নতুন অডিও ফরম্যাট নিয়ে জোরেশোরে কাজ শুরু করে। অবশেষে ১৯৭৯ সালের মার্চ মাসে বিশ্ববাসীর কাছে উন্মোচিত হয় সিডি বা কমপ্যাক্ট ডিস্ক(Compact Disk) । ঠিক এর এক সপ্তাহ পর এই নতুন ফরম্যাট কে কিভাবে আরও উন্নত করা যায় সেই লক্ষ্যে জাপানের সনি কর্পোরেশনের সাথে চুক্তি করে ফিলিপস।

প্রথমে এক ধন্টার অডিও ধারনক্ষমতা সম্পন্ন ডিস্ক তৈরির কথা থাকলেও পরবর্তীতে তা ৭৪ মিনিটে উন্নত করা সম্ভব হয়। ১৯৮০ সালে ফিলিপস এবং সনি যৌথ ভাবে  তৈরি করে “রেড বুক” নামের কমপ্যাক্ট ডিস্ক।
১৯৮২ সালে ফিলিপস প্রথমবারের মতো বাণিজ্যিক ভাবে সিডি প্লেয়ার বাজারে ছাড়ে। এর মূল্য ছিল প্রায় ১০০০ ইউরো। প্রথমদিকে শুধুমাত্র ক্লাসিক্যাল মিউজিক এর অ্যালবামই সিডি আকারে বাজারে ছাড়া হয়। সিডি আকারে প্রথম অডিও অ্যালবাম The Visitors বাজারে ছাড়ে বিখ্যাত ব্যান্ড ABBA .

Download করুন – The Visitors
১৯৮৫ সালে বাজারে আসে Dire Strait এর বিখ্যাত অ্যালবাম Brother In Arms . মূলত এই অ্যালবামটিই সিডি কে জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছে দেয়। এই অ্যালবামটি বিক্রি হয় ১ মিলিয়নের চেয়ে বেশি। এমন কি বিক্রির দিক থেকে এ যাবৎকালের সবচেয়ে জনপ্রিয় সিডি অ্যালবাম এর নামও  Brother In Arms.

Download করুন – Brother In Arms
২০০০ সালে সারাবিশ্বে সিডির বিক্রির পরিমাণ ছিল প্রায় ১.৪৫৫ বিলিয়ন।
২০০৭ সালে সারাবিশ্বে সিডির বিক্রির পরিমাণ ছিল প্রায় ১.৭৫৫ বিলিয়ন।
২০০৮ সালে সারাবিশ্বে সিডির বিক্রির পরিমাণ ছিল প্রায় ২০০ বিলিয়নের বেশি।
তবে অনলাইনে ডাউনলোডের সুবিধা বেড়ে যাওয়াতে সিডি বিক্রির পরিমাণ কমে গেছে ব্যাপক হারে।
প্রকৃতিতে যেমন বিবর্তন ঘটছে ঠিক তেমন বিবর্তন ঘটছে প্রযুক্তি বিশ্বেও। এক সময় ফ্লপি ডিস্ক এর খুব প্রচলন ছিল। এখন ফ্লপির যুগ শেষ। ঠিক তেমনি সিডি র পর এলো ডিভিডি। এখন ডিভিডি র পরে আসল ব্লু-রে ডিস্ক। হয়তোবা একদিন প্রযুক্তির ছোয়াতে একদিন সিডি হারিয়ে যাবে। এর পরিবর্তে নতুন কিছু দিয়ে কাজ করবে মানুষ।
এই ছিল সিডি বা কমপ্যাক্ট ডিস্ক এর প্রায় ৩২ বছরের এক পলক।
বিস্তারিত পড়ুন ... »

কখনো যা বলতে চাইনি

খুব হিংসা হয় যখন দুই বন্ধুকে দেখি মন খুলে প্রাণ খুলে হেসে হেসে মনের কথা বলছে। আমার সারা জীবনেও সৌভাগ্য হয়নি কারো সাথে মন খুলে কথা বলার।
বাস্তবতার চাপেই হোক, কি পরিবেশের প্রভাবেই হোক অথবা নিজের বানানো বিভাজনের কারণেই হোক, অনেকগুলো বলয় নিয়ে আমাদের চলতে হয়। বন্ধুদের বলয়, সহকর্মীদের বলয়, সহপাঠীদের বলয় বা পরিচিতদের বলয়। এগুলো ম্যানেজ করে সবাই চলছে, কোথাও কোন সমস্যা হচ্ছে না। আমার ব্যাপারটা হয়তো একটু আলাদা। খুব ছোটবেলা থেকেই পারিবারিক প্রথা আর সামাজিক প্রথা, এ দুইয়ের সাথে মিশে চলতে হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে পারিবারিক প্রথা সামাজিক প্রথার সাথে সাংঘর্ষিক হয়েছে। আবার কোথাও সামাজিক প্রথার সাথে সংঘর্ষ লেগেছে পারিবারিক প্রথার। বাবা-মা চেয়েছেন আমাদের একভাবে গড়ে তুলতে, সে শিক্ষা আবার বাড়ির বাইরে এসে দেখি পুরোই অন্যরকম। ওখানকার শিক্ষার সাথে বাসার ভেতরের শিক্ষার মিল নেই। একটা বয়স পর্যন্ত এগুলো মিলিয়ে চলা যায়, সমস্যা হয় না। কিন্তু আস্তে আস্তে, বড় হবার সাথে সাথে ব্যাপারগুলো আরও ব্যবহারিক হয়ে উঠতে থাকে এবং বেছে নিতে হয় যে কোন একটিকে। বেশিভাগ ক্ষেত্রে আমার সাথের ছেলেপেলেদের দেখেছি, পরবর্তীতে এ দুয়ের কোন একটিকে বেছে নেয় এবং সেইমত ভবিষ্যতের দিকে পা বাড়ায়। আমার সীমাদ্ধতাগুলোর একটি হলো, এ দুয়ের কোনটিকেই অস্বীকার করার মত মানসিক জোর আমার ছিলনা, এখনো নেই। যার কারণে ‘বাহির বলে দূরে থাকুক, ভিতর বলে আসুক না’ জাতীয় সমস্যায় আমাকে থাকতে হয়েছে সারাজীবন, এখনো থাকতে হয়।
বাইরের গন্ডির দুনিয়ায় আমার ভাল বন্ধু আছে বেশ কয়েকজন। সেখানকার ব্যাপারগুলো নিয়ে আমি তাদের সাথে প্রায়ই কথা বলি। আর নিজের পারিবারিক গন্ডিতে ফিরলে আমার আচরণ হয় আরেকরকম, সেখানে আমার সত্ত্বা আলাদা। ভেতর-বাইরের মধ্যে ব্যালেন্স থাকলে কথা ছিল, মিলিয়ে চলা যেত। কিন্তু দুটোর মধ্যে ইমব্যালেন্সিংয়ের পরিমাণ এত বেশি, যে সেটা ভাবতেও ভয় লাগে। এক দিকে যেটা খুবই স্বাভাবিক, অন্যদিকে সেটাই নিষিদ্ধ, আবার অন্যদিকের নিষিদ্ধ ব্যাপারগুলো এদিকে কোন ব্যাপারই না। এ দুই পক্ষকে সন্তষ্ট রাখতে গিয়ে ক্রমাগত পিষ্ট হতে হয় আমাকে। আমার বোঝার বয়সের পর থেকে এই দুই পক্ষের ডিমান্ডগুলো হাসিমুখে পালন করতে গিয়ে নিজেকে এখন একজন দাসের চাইতে বড় কিছু মনে হয় না। ভেতরকার উদ্গত কষ্টগুলো, অসহ্য ব্যাথাগুলো খুলে বলার মত কাউকে খুঁজে পাই না। কাকে বলবো? এক পক্ষের কাছে অন্য পক্ষের অনুভূতিগুলো অর্থহীন, হাস্যকর রকমের মূল্যহীন।
সারাদিন হয়তো অনেক কাজ করি। কিন্তু আমার কাছে সেগুলো একজন আজ্ঞাবহ বোবা দাসের কাজের চাইতে বেশি কিছু মনে হয় না। সরলপ্রাণ, বোবা একজন দাসকে দিয়ে যেমন সবাই ইচ্ছামত কাজ করিয়ে নেয়, আমার অবস্থা ঠিক সেরকম। কোন কিছুর বিপরীতে দাঁড়ানোর ক্ষমতা, কোন কিছুকে অস্বীকার করার ক্ষমতা, কোন জিনিস থেকে বেরিয়ে আসার ক্ষমতা যার নেই, সে ছাড়া কেউ বুঝবে না, মনে কতো ছাইচাপা কষ্ট নিয়ে কেউ দাসত্ব করে। দাসের নিজের যে একটা সত্ত্বা আছে, সেটা নিয়ে কেউ ভাবে না। ওদিককার লোকেরা ভাবে, আরে ওতো আমাদেরই লোক, এটা করাও, সেটা করাও। আর এদিককার লোক মনে করে, এ তো নিজেদেরই লোক, করাও তাকে দিয়ে ইচ্ছামত কাজ। বোবা দাসটা তখন বলতেও পারেনা, এই দুই বিপরীত পরিবেশের চাপে সে কতটা পিষ্ট হচ্ছে। কতদিন এমন গিয়েছে, মনে অনেক যন্ত্রণা, অনেক অস্থিরতা মাথায় নিয়ে বন্ধুর সাথে হাসিমুখে কথা বলেছি, পিঠ চাপড়ে দিয়েছি, বলেছি নো প্রবলেম! ব্যাটা ভেবে নিয়েছে, আমি কতই না সুখে আছি! নিজের ভেতরকার কথাগুলো কাউকে বলতে গিয়েও থমকে গিয়েছি। বলে কি লাভ, কেউ বুঝবেনা। মুখে জোর করে হাসি এনে তাদেরই দাসত্ব করতে থাকি।
তাই নিজের যন্ত্রণায় পুড়তে হয় নিজেকেই। একটা বস্তাকে দড়ি বেধে টানলে সে একদিকেই যায়। কিন্তু তাকে যদি পাঁচটা রশি বেঁধে পাঁচদিক থেকে টানা হয়, ছিন্নভিন্ন হওয়া ছাড়া তার কোন উপায় থাকে না। এরকম ছিন্নভিন্ন হয়ে চলেছি প্রতিদিন, প্রতিক্ষণ। মহাকাল আমাকে দিয়ে আর কতকাল রশি টানাটানি খেলবে, সে অপেক্ষায় দিন গুনি।
কথায় বলে, বোবার শত্রু নেই। কথাটা সত্য নয়। বোবার শত্রু আছে, কিন্তু সেকথা প্রকাশ করার ক্ষমতা তার নেই।
পৃথিবীর সকল প্রাণী সুখী হোক। দুয়েকটা বোবা প্রাণী কি ভাবলো তাতে কার কি আসে যায়?
বিস্তারিত পড়ুন ... »

অ্যানা ফ্রাঙ্কের বধ্যভূমিতে

IMG_5560
লাগামছাড়া গতিতে গাড়ী চলেছে জার্মানির সুবিখ্যাত মোটরওয়ে দিয়ে লোয়ার সাক্সনি এলাকায়। পাহাড়, নদী, বন, উপত্যকা পাড়ি দিয়ে ক্ষুদে এক ঝরাপাতা ছড়ানো রাস্তায় ঢুকে ছোট্ট শহর বের্গেন পেরিয়ে আমরা চলেছি ইতিহাস কুখ্যাত বের্গেন-বেলসেন কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে। ইতিহাসে দগদগে ক্ষত নাৎসি অধিকৃত জার্মানিতে যুদ্ধবন্দীদের মরণফাঁদ সৃষ্ট ও পরিচালিত কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পগুলোর অন্যতম এই স্থানে অন্তত সত্তর হাজার তরতাজা প্রাণ ঝরে পড়েছে ২য় বিশ্বযুদ্ধ বছরগুলোতে, আমাদের আজকের যাত্রা ইতিহাসের সেই গুপ্ত কালো অধ্যায়ের পানে।
সুমসাম চারিদিক, উঁচু গাছের সমারোহ, গায়ক পাখিরাও নিস্তব্ধ হয়ে গেছে মধ্যদিনের সূর্যের তেজে, চারিদিকে প্রাচীর ঘেরা এলাকা। খোলা গেট পেরিয়ে সামনের দিকে চোখ যেতেই গোটা শরীর কাঁটা দিয়ে উঠল- গাছের বেষ্টনী পেরিয়েই দৃষ্টিপথে মধ্যম আকৃতির ফাঁকা মাঠমত জায়গা, তার ওপারেই আবার সীমানা প্রাচীর, এই দৃশ্যটুকুই মনে করিয়ে দিল সেলুলয়েডের ফিতেয় ২য় বিশ্বযুদ্ধের গণহত্যা ও বন্দীশিবির নিয়ে তৈরি শিল্ডার্স লিস্ট, ডায়েরি অফ অ্যানা ফ্রাঙ্ক, বয় ইন দ্য স্ট্রাইপড পাজামা, লাইফ ইজ বিউটিফুল, দ্য রিডার ইত্যাদি চলচ্চিত্রগুলোর দৃশ্যবিশেষের কথা। ঠিক একই রকমের স্থাপনা, খানিকটে ফাঁকা জায়গা, বেড়া বেষ্টিত। কেবলমাত্র জন কোলাহল নেই, বন্দীশিবিরের ঘরগুলো ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে অনেক যুগ আগেই, বিদ্যুৎচালিত কাঁটাতারের বেড়ার স্থান দখল করেছে কংক্রিটের সীমানা প্রাচীর।
IMG_5534
IMG_5554
অন্তর্দৃষ্টিতে স্পষ্ট দেখতে পেলাম হাজার হাজার যুদ্ধবন্দী সারি বেঁধে দাড়িয়ে আছে হুকুম তামিলের অপেক্ষায়, কঠোর পরিশ্রমের সাক্ষর তাদের পোশাকে, মুখে, নীরব চাহনিতে। নারী, শিশু, বৃদ্ধ কেউ বাদ নেই সেই অভিশপ্ত লাইনে। লাশের স্তূপ পড়ে আছে অদূরেই, পোড়ান হচ্ছে বন্দীদের কাপড়-জুতো, হয়ত মৃতদেহও, জীবন্ত বিভীষিকা, ধরণীর বুকে কল্পকথার নরক নামিয়ে এনেছে মানুষের রূপধারী মূর্তিমান পিশাচেরা।
মাঠের আগেই এক স্মৃতিফলক, তাতে ক্ষুদে নুড়িপাথরের সমারোহ। দর্শনার্থীরা সমর্পণ করেছে মৃতদের স্মৃতিতে, লেখা রয়েছে স্মৃতিফলকটি ১৯৩৯-১৯৪৫ পর্যন্ত এই বধ্যভুমিতে নিহতদের স্মরণে নির্মিত।
IMG_5540
১৯৩৯ সালে সালেই এই কুখ্যাত স্থাপনার যাত্রা শুরু হয় যুদ্ধবন্দীদের বন্দীশিবির হিসেবে, যেখানে আনা হয়েছিল ফ্রেঞ্চ, পোলিশ, বেলজিয়ান, রাশান বন্দীদের। কিন্তু বন্দীশিবিরের যথাযথ সুবিধা ছিল না বিন্দুমাত্র- অপ্রতুল খাবার, কনকনে ঠাণ্ডা, আদিকালের বাসস্থান। পরিণতিতে ১৯৪১ সালের জুলাইতে পাঠানো ২০,০০০ রাশান বন্দীর ১৮,০০০ই ঢলে পড়েন মৃত্যুদেবতার কোলে। ১৯৪৩ সালে হিটলারের অন্যতম দোসর হাইনরিখ হিমলারের নির্দেশে এই বন্দীশালাকেই পরিণত করা হয় কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে, আনা হয় হাজার হাজার ইহুদী ও রাশান বন্দীদের। এদের অনেককেই নাৎসি সরকার ব্যবহার করে যুদ্ধকালীন বন্দী বিনিময়ের হাতিয়ার হিসেবে, অন্যান্য দেশে আটককৃত নাৎসি বন্দীদের বদলে মুক্তি দেয়া হয় অল্প সংখ্যক ডাচ ইহুদী বন্দীদের। পরবর্তী বছরগুলোতে এমনভাবেই চলতে থাকে প্রবল দমন পীড়ন।
১৯৪৫ সালের ১৫ এপ্রিল কানাডা-ব্রিটিশ যৌথবাহিনীর হাতে এই ক্যাম্পের পতন ঘটে, তখনো ৬০,০০০ বন্দীকে জীবিত অবস্থায় পায় মিত্রবাহিনী, যাদের অধিকাংশই ছিলেন মারাত্নক অসুস্থ আর চত্বরে ছিল মাটি চাপা দেবার অপেক্ষায় ১৩,০০০ শবদেহ। এক স্মৃতি ফলকে উল্লেখিত আছে কারা মূলত এই জান্তব আক্রোশের শিকার হয়েছিলেন, তাতে মূলত দেখা যায় বের্গেন-বেলসেন ক্যাম্পে নিহত ৭০,০০০ বন্দীর ৩০,০০০ ছিলেন ইহুদী, প্রায় সমসংখ্যক রাশান, সেই সাথে প্রচুর সমকামী, জিপসি আর নাৎসি বিরোধী স্বদেশপ্রেমী জার্মানরা( কোন এক অদ্ভুত কারণে ইহুদীদের সাথে সাথে জিপসি ও সমকামীদের উপরেও অত্যাচারের খড়গ চালিয়েছিল হিটলার আর তার রক্তপিপাসু বাহিনী)। এই বধ্যভূমিতে বলি হওয়া সবচেয়ে বিখ্যাত বন্দী ছিলেন বিশ্বের ইতিহাসে জনপ্রিয়তম ও
সর্বাধিক পঠিত রোজনামচার লেখিকা কিশোরী অ্যানা ফ্রাঙ্ক।
পাঠক, মনে আছে তো অ্যানা ফ্রাঙ্কের কথা? সেই যে আমাদের ষষ্ঠ শ্রেণীর ইংরেজি পাঠ্য বইতে উল্লেখ ছিল তার ও তার অতিবিখ্যাত ডায়েরী কিটির কথা। জন্মগত ভাবে জার্মান হলেও নাৎসি বাহিনী ক্ষমতায় আসার পর ১৯৩৪ সালে হল্যান্ডের রাজধানী আমস্টারডামে চলে আসেন তারা, নিজ দেশ ছেড়ে আসার একটাই কারণ ছিল তারা ছিলেন পারিবারিক ভাবে ইহুদী। যদিও ইতিহাসের নথিপত্র ঘেটে দেখা যায় তাদের পরিবার ছিল অতি মুক্তমনা, কোন ধর্মের সাথেই তাদের নিবিড় বন্ধন ছিল না বরং তাদের বন্ধুতালিকায় ছিল নানা জাতির নানা ধর্মের লোক। বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে অ্যানা ফ্রাঙ্ক ও তার পরিবার ১৯৪২ সালের পরপরই দখলদার বাহিনীর হাত থেকে রক্ষা পেতে আত্নগোপন করেন। এই বন্দিজীবনেই ১৩তম জন্মদিনে উপহার হিসেবে পাওয়া ডায়েরীতে( যার নাম অ্যানা দিয়েছিলেন কিটি) তার জীবনের দিনলিপি লিখে রাখা শুরু হয়। সেই আবদ্ধ জীবনের দুঃসহ অভিজ্ঞতা, কৈশোরে ডানা মেলার উত্তাল রঙিন দিনের বদলে ভ্যাঁপসা আঁধার ঘেরা গুমোট জীবন। দিনের পর দিন, মাসের পর মাস চলে যায় আপন ধীর অবশ্যম্ভাবি গতিতে গড়িয়ে, অ্যানার রোজনামচার পাতায় লিপিবদ্ধ হতে থাকে চারপাশের অভিজ্ঞতা।
প্রশ্ন করেছেন তিনি জগতের বড়দের কাছে- মানুষ কেন যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে? কচি মনের এত সরল সেই প্রশ্নের উত্তর কি আজো জানা আছে আমাদের রাষ্ট্রনায়কদের! ১৩ বছরের এক কিশোরী ধর্ম সম্পর্কে কতটুকুই বা জ্ঞান রাখে? মসুলমান, হিন্দু, খ্রিষ্টান, ইহুদীর সে বোঝেই টা কি! শুধুমাত্র ইহুদী ধর্মাবলম্বী পরিবারে জন্মের কারণেই যে তাদের এই নিষ্ঠুর হেনস্তা এটাই তাকে করে তোলে আরও দুঃখী, সংকুচিত। বয়ঃসন্ধিকালীন সময়ের নানা ঘটনা, মাসের পর মাস একঘেয়ে ধুসর জীবনযাত্রা, বনের পশুর মত গুহার গভীরে লুকিয়ে কেবলই ধুঁকে ধুঁকে বাঁচার চেষ্টার মাঝেও হঠাৎ আলোর ঝলকানির মত উঁকি দিয়ে যায় কৈশোর প্রেম। এভাবেই ছোট ছোট আবেগ মোড়া ঘটনায় ভরে উঠতে থাকে ডায়েরীর পাতা ১৯৪৪ সালের ১ আগস্ট পর্যন্ত, এর পরপরই গুপ্তপুলিশ গেস্টাপোর হাতে বন্দী হয় ফ্রাঙ্ক পরিবার, থেমে যায় ডায়েরী কিটির তরতর বেগে ছুটে চলা।
এরপরে নানা বন্দীশালা হয়ে অ্যানা ফ্রাঙ্ক, তার মা এডিথ ফ্রাঙ্ক ও বোন মার্গট ফ্রাঙ্কের আগমন ঘটে বের্গেন-বেলসেন বধ্যভূমিতে। সেখানে কোন ডায়েরী ছিল না বিধায় সেই নিষ্ঠুর পঙ্কিল দিনগুলোর করুনঘন বর্ণনা আমাদের হাতে নেই কিন্তু একাধিক প্রত্যক্ষদর্শীর মাধ্যমে জানা যায় সবচেয়ে কমবয়সী বন্দীদের একজন অ্যানা বিশেষ ব্যাথাতুর ছিলেন শিশুবন্দীদের গ্যাসচেম্বারে নিয়ে যাবার ঘটনায়। চরম নিষ্ঠুরতায় প্রত্যেকেই নিয়োজিত ছিলেন পাথর ভাঙ্গা ও পরিবহনের অত্যন্ত ক্লান্তিকর কায়িকশ্রমের কাজে। কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পের নিয়ম অনুযায়ী প্রত্যেকেরই মাথা কামানো থাকত আর বন্দী নম্বরটি হাতের এক জায়গায় ছিল উল্কির মাধ্যমে খোদাই করা।
১৯৪৫ সালের মার্চে টাইফাস রোগ এই শিবিরে ছড়িয়ে পড়ে মহামারী আকারে, শেষ পর্যন্ত এই রোগই পৃথিবী থেকে ছিনিয়ে নিয়ে যায় সবচেয়ে বিখ্যাত রোজনামচার লেখিকাকে, যার বয়স হয়েছিল কেবল ১৫ !
সেই সাথে অন্যভুবনে যাত্রা করেন অ্যানার বোন মার্গটও। মহাযুদ্ধের করালগ্রাস থেকে কেবল বেঁচে ফেরেন বাবা অটো ফ্রাঙ্ক,তিনিই আমস্টারডামের সেই বন্দীশালা থেকে উদ্ধার করেন মেয়ের ডায়েরী ও অন্যান্য স্মৃতিবহুল সংগ্রহ। মনের গহনে তার আশা ছিল হয়ত বেঁচে আছেন অ্যানা ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা, তাদের হাতেই তুলে দিতে চেয়েছিলেন সেই স্মারকগুলো।
আমস্টারডামের সেই বাড়ী, সেই আঙ্গিনা, সেই বাদাম গাছ অবলোকনের সৌভাগ্য হয়েছিল কবছর আগেই আর আজ এইখানে আমরা এক অভিশপ্ত বন্দীশিবিরে সেই কিশোরীর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের আশায়। এইখানে কিছুদিন আগে অ্যানা ও তার বোন মার্গটের প্রতি ভালোবাসা জানিয়ে কালো রঙের এক এপিটাফ বসিয়ে গেছেন ভক্তরা, যেখানে সাদা হরফে খোদাই করা রয়েছে তাদের নাম।
IMG_5559
অদূরেই ঘাসে ছাওয়া এলোমেলো ছড়ানো কিছু সবুজের চিহ্ন, সেখানে আরো এলোমেলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে নানাকৃতির ফ্রেমে বাঁধানো সাদাকালো আলোকচিত্র, সেই বিভীষিকায় নিহত অনেকের ছবি।
IMG_5551
বড় এক স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপন করা হয়েছে যে সমস্ত শবদেহ সমাহিত করা হয়নি তাদের উদ্দেশ্যে। অদূরেই আকাশছোঁয়া অবেলিস্ক, ফুলের তোড়া ইতস্তত, ইদ্দিস আর হিব্রু ভাষায় পাথর কুঁদে লেখা নানা বাণী। বধ্যভূমিটির একপ্রান্তে সুউচ্চ ক্রুশ, তার পাশেই ছোট ছোট প্রস্তরস্তম্ভ।
IMG_5543
IMG_5573
IMG_5572
IMG_5562
নারকীয় ঘটনাগুলোর ৬৫ বছরপরও এই রোদেলা গ্রীষ্মের মাঝেও জায়গাটিকে কেবলই অভিশপ্ত মনে হয়, যেন কান পাতলেই শোনা যাবে সেই বিদেহি শহীদদের আর্তনাদ, মানুষ জান্তব আক্রোশ চরিতার্থের সকরুণ কাহিনী।
ফেরার পথে মূল ফটকের পাশে এক সংগ্রহশালায় দেখানো হচ্ছে সেই সময়ের কিছু ভিডিও ফুটেজ, কিন্তু এই পরিবেশে আর দুঃখ অবলোকন করার ভার নিতে চাইছে না মন, এক ধরনের চুপিসারেই বের হয়ে এলাম সেই নিঠুর বধ্যভূমি থেকে।
IMG_5593
সান্ত্বনা এটাই- একটা সময়ে ইতিহাস ঠিকই অত্যাচারিতের সুবিচার প্রতিষ্ঠা করে, সেই নারকীয় ধ্বংসযজ্ঞের হোতাদের নাম আজ বিস্মৃত প্রায়, নিজ দেশ জার্মানিতেও (হিটলারের ক্ষেত্রে অস্ট্রিয়া) তারা অশ্রুত, কিন্তু ১৫ বছরের কিশোরী অ্যানা ফ্রাঙ্ক আজ বিশ্বের সকলের হৃদয় জুড়ে অমর।।
d0020570_8143441
I don’t think of all the misery, but of the beauty that still remains… My advice is : “Go outside, to the fields, enjoy nature and the sunshine, go out and try to recapture happiness in yourself and in God. Think of all the beauty that’s still left in and around you and be happy!” ….Anne Frank
বিস্তারিত পড়ুন ... »

bdnews24.com - Home

ইরান বাংলা নিউজ

বিবিসি বাংলা

দৈনিক সংগ্রাম