২০ নভে, ২০১১

স্বপ্ন নগরী ভেনিস

252062_10150752466145497_608590496_20264520_6466160_n
স্কুলে পড়ার সময় আমাদের র‍্যাপিড বইতে ছোট এক গল্প ছিল, বিশ্বের অন্যতম সেরা অভিযাত্রী মার্কো পোলোকে নিয়ে, স্রেফ পদব্রজেই বিশ্বের এক-তৃতীয়াংশ চষে ফেলেছিলেন প্রায় হাজার বছর আগে। এই পর্যটক শিরোমণির জন্ম নগরী ইতালির ভেনিস নগরীতে, বিশ্বের কাছে যার পরিচিতি খালের শহর বলে, হবেই বা না কেন, রাস্তার বদলে সরু সরু খালে ভর্তি এই আজব শহর, দেড় হাজার বছর আগে ভূমধ্যসাগরের বুকে যার গোড়াপত্তন হয়েছিল।
আরেকটু বড় হয়ে পড়লাম সৈয়দ মুজতবা আলীর রসগোল্লা আর শেক্সপীয়ারের মার্চেন্ট অফ ভেনিসের কিশোর সংস্করণ, সাইলক, পোর্শিয়া আর অন্যান্য চরিত্রের সাথে মাথার ভিতরে গেথে গেল জলের উপরে তৈরি বাস্তবের বুকে কল্পকথার সেই শহরটির কথা।
IMG_1169
ভেনিসকে বলা হয় পৃথিবীর সবচেয়ে অবাস্তব শহর, সেই সাথে সবচেয়ে রোমান্টিকও! সে এক অন্য ভুবন, অনন্য তার রূপ, সেই সাথে এমন এক অদ্বিতীয় বৈশিষ্ট্যের অধিকারী ভেনিস যে তার তুলনা কেবলমাত্র সে নিজেই। অথচ মজার ব্যাপার হচ্ছে ভেনিসের মোট আয়তন মাত্র ৮ বর্গ কিমি, কিন্তু প্রায় ৪০০ সেতুর মাধ্যমে সংযুক্ত একশ সতেরটি ক্ষুদে দ্বীপের এই শহরে একবার প্রবেশ করলেই একে মনে হয় সীমাহীন, চারিদিকে কেবল জলেরই রাজত্ব।
IMG_0851
প্রায় ১৫০০ বছর আগে আত্তিলা নামের এক কিংবদন্তীতে পরিণত হওয়া হান দস্যুর হাত থেকে রক্ষা পাবার জন্য উপকূলবর্তী এলাকার জনগণ এই দ্বীপপূর্ণ জলাভূমিতে ক্ষুদে ক্ষুদে বসতি গড়ে করে বাস করতে আরম্ভ করে, আত্তিলা অন্তত সেই জলকাদা অধ্যুষিত ভূখণ্ডে ঘোড়ায় চেপে আক্রমণ করতে পারবে না এই আশায়। সেই থেকেই ধরণীর বুকে ভেনিসের যাত্রা শুরু।
IMG_1198
ভেনিসে বছরের ৩৬৫ দিনই (লিপিয়ারে ৩৬৬ দিন) পর্যটকদের ভিড়ে সরগরম, মানুষের ভিড়ে হাটাই মুস্কিল। মজার ব্যাপার হচ্ছে এই লাখো লাখো লোকের মধ্যে শতকরা ৭৫ জনই বিমুগ্ধ দর্শনার্থী, যারা দিকভ্রান্ত হয়ে চলাচল করতে করতে দুচোখ ভরে পান করছে সেই রূপসুধা। এ এক অনন্য শহর যেখানে গাড়ী, ঘোড়া, বাস যাবতীয় স্থলযান অচল, শহরের যেখানে শেষ সেখানকার প্রান্তসীমায় রেলষ্টেশনে নামার পর থেকেই যাত্রা শুরু হয় পদব্রজে নতুবা নানা ধরনের জলযানে, এই সবার ভরসা।
IMG_0964
IMG_1036
এমন উদভ্রান্ত হয়েই হেটে চলেছি, কয়েক হাত পরপরই সরু সরু এক একটা খাল মাকড়শার জালের মত ভেনিসের বুক চিরে চলে গেছে, আর তাই বা বলি কি করে! আক্ষরিক অর্থে ভেনিস তো নির্মিতই হয়েছে এই জলভূমির উপরে! এর মাঝে আবার আছে শহরটিকে সমান দুই ভাগে ভাগ করা সবচেয়ে চওড়া খাল যা পরিচিত গ্র্যান্ড ক্যানেল নামে জগদ্বিখ্যাত, স্থাপনার জগতে এক অটুট বিস্ময় এই গ্র্যান্ড ক্যানেল।
IMG_0801
সেই সাথে খানিক পরপরই খাল বিধায় পারাপারের জন্য বাহারী সব সেতু। নয়ন জুড়ানো রঙ, নকশা, স্থাপত্যশৈলীর। এর মাঝে গ্র্যান্ড ক্যানেলের উপরের বিশাল সেতুটাই সবচেয়ে জমকালো।
ভেনিসে বসবাসরত সব পরিবারেরই নিজস্ব জলযান আছে, যা বাড়ীর সদর বা খিড়কি দরজার কাছে বাঁধা, নামী হোটেলগুলোরও প্রত্যেকেরই আছে নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থা।
IMG_0823
IMG_1214
সুবর্ণ যুগে ভেনিসে ৮০ ধরনের জলযান চলাচল করত, এর মধ্যে সেই মধ্য যুগ থেকে নিজস্ব বৈশিষ্ট্য ও আকর্ষণ বজায় রেখে চলেছে বিশ্বের সবচেয়ে রোমান্টিক জলযান বলে খ্যাত গনডোলা। ইন্যুইটদের ( এস্কিমো) কথা বললেই যেমন কুকুরটানা স্লেজ গাড়ির কথা মানসপটে ভেসে ওঠে তেমন ভেনিস শব্দটা কর্ণকুহরে প্রবেশ করা মাত্রই চোখের সামনে ভেসে ওঠে সরু সুসজ্জিত গনডোলা।
IMG_0943
IMG_0946
IMG_1104
গন্তব্যহীন ভাবে ঘুরতে ঘুরতেই দেখি সেখানকার ন্যাচারাল হিস্ট্রি জাদুঘরের সামনে হাজির হয়ে গেছি, টিকিটের বালাই নেয়, সদর দরজা দিয়ে ভেতরে ঢুকতেই সোজা চোখ পড়ে কোটি বছর আগে সাগর দাপিয়ে বেড়ানো ইকথিওসরের জীবাশ্মের উপরে। বিশ্বের নানা কালে সংঘটিত প্রাকৃতিক পরিবর্তন আর জীবজগতের বিবর্তনের নমুনা থরে থরে সাজানো। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য মনে হল ১১ কোটি বছরের পুরনো ৩৩ ফিট লম্বা সুপ্রাচীন কুমির সুপার ক্রোকের জীবাশ্ম, যার খাদ্য তালিকার অন্যতম ছিল নানা প্রজাতির ডাইনোসর!
এখানেই কোন বাড়ীতে জন্মে ছিলেন পর্যটক গুরু মার্কো পোলো, ১৭ বছর বয়সে ভেনিস ছেড়ে সুদূরের পিয়াসে বাবা-কাকার সাথে রওনা দিয়েছিলেন কুবলাই খানের চীনদেশের উদ্দেশ্যে, প্রথম দিককার একজন ইউরোপিয়ান হিসেবে চীনে যাবার পর দীর্ঘ ২৬ বছর পর আবার ফিরে আসেন ভেনিসে, বিশ্বকে শোনান তার অবিশ্বাস্য ভ্রমণ কাহিনী। ভেনিসের সবচেয়ে বিখ্যাত অধিবাসী হিসেবে তাকে বলা হয়ে থাকে, দর্শনার্থীরা খুজে বাহির করতে চান কোন বাড়ীতে থাকতেন এই ভ্রমণপিপাসু।
এখানেই হয়ত হেঁটে বেড়াতেন চিন্তামগ্ন বিজ্ঞানী লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি, যিনি ভেনিসে স্বল্প সময়ের অবস্থান কালে বিশ্বের প্রথম ডুবুরীর পোশাকের নকশা করেছিলেন।
ভেনিসের বাড়ীগুলো আজো তেমনটাই আছে যেমন ছিল পাঁচশ বা হাজার বছর আগে, অনেক জায়গাতেই চুন পলেস্তারা খসে পড়েছে, ছাদটাও মনে হচ্ছে ভেঙ্গে পড়ার যোগাড় কিন্তু মহাকালের করাল গ্রাসকে অগ্রাহ্য করে টিকে আছে শতাব্দীর পর শতাব্দী।
IMG_0977
আর আছে মুখোশ, ভেনিসের রঙবেরঙের মুখোশগুলো এমনিই জগদ্বিখ্যাত, তার উপর প্রতিবছর ফেস্টিভ্যালের সময় দর্শনীয় চিত্র-বিচিত্র সব মুখোশ শোভা পায় প্রায় সবার মুখে। সারা বছরই চলে তার বিকিকিনি গোটা শহর জুড়ে বসা দোকানগুলোতে। কি বাহারি এক একটা মুখোশ, কোনটা কেবল চোখ ঢাকার জন্য, কোনটা বা পাখির সুতীক্ষ ঠোঁটের মত, কোনটা বিশালাকৃতির, কোনটা আবার পালকময়। ওস্তাদ লোকের হাতের কাজ, দেখেই শ্রদ্ধা হয় তার সুক্ষ রুচি আর সমন্বয়ের মুন্সিয়ানার প্রতি। কবি পাবলো নেরুদার মত ব্যক্তিগত মুখোশের বিশাল সংগ্রহ গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখি অনেক দিন থেকেই, ভেনিসের একটা মুখোশ কিনেও ফেললাম সেই ভবিষ্যতের আশায়।
IMG_0845
ভেনিসের মাছের বাজারও এক অবশ্যদ্রষ্টব্য স্থান। বাড়ীর কাছে ভুমধ্য সাগরের নানা রঙের রূপোলী ফসল তো আছেই, আরও আছে সুদূর উত্তর সাগর আর আটলান্টিক থেকে আসা জাত-বেজাতের সব সামুদ্রিক প্রাণী। রকমারি শামুক, ঝিনুক থেকে শুরু করে অক্টোপাস, স্কুইড কি নাই সেখানে!
IMG_0862
হঠাৎ কানে এল পুলিশের ভোঁ ভোঁ সাইরেন, আরে পুলিশ আসবে কি করে এই জলময় ভূখণ্ডে! উত্তর মিলল তৎক্ষণাৎই, দ্রুতগতির দুটি স্পীডবোটে করে পুলিশ সাঁ করে সামনে দিয়ে জেমস বন্ড স্টাইলে উধাও হয়ে গেল!
IMG_0869
ঘুরতে ঘুরতে এখন যে ভিড়ের ঠ্যালায় ভেনিসের সবচেয়ে বিখ্যাত স্থাপত্য সেন্ট মার্কোর ক্যাথেড্রালের সামনে চলে এসেছি নিজেও বলতে পারব না।
IMG_1054
গমগমে জনসমুদ্র, ক্যাথেড্রালে ঢোকার লাইনটাতে কমপক্ষে হাজার তিনেক মানুষের ভিড়, যা চলে গেছে বিশাল চত্বরের উপর দিয়েই অদুরে দৃশ্যমান ভূমধ্যসাগরের ফেনিল ল্যাগুনের দিকে, নেপোলিয়ন এই চত্বরকেই ইউরোপের সবচেয়ে সুদৃশ্য ড্রয়িংরুম বলেছিল।
IMG_1092
IMG_1069
কাতারে দাঁড়ালেও পরে জানা গেল কাঁধের ব্যাগ নিয়ে ভেতরে ঢোকা সম্ভব নয়, কাজেই সেটা ভবিষ্যতের জন্য মুলতুবী রেখে চারপাশে মনের সাধ মিটিয়ে দেখে নিলাম মানবসৃষ্ট বিস্ময়,
IMG_1048
এর সিংহদরজার উপরে শোভা পাচ্ছে চারটি প্রমাণ আকৃতির অতুলনীয় শৈল্পিক সৌন্দর্যের অধিকারী ধাতব ঘোড়ার ভাস্কর্য, এগুলো প্রায় হাজার বছর আগে বাইজেন্টাইন স্রামাজ্যের প্রাণকেন্দ্র ইস্তাম্বুল থেকে লুট করে আনা হয়েছিল, সেই থেকে ভেনিসই এদের ঠিকানা।
IMG_1062
বাহিরের দেয়ালে বাইবেলের নানা কাহিনী সুক্ষ চিত্রকর্মের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
IMG_1043
কাছের ল্যাগুনে গনডোলা আর জেলে নৌকার ভিড়, দৃষ্টিসীমার মাঝে কিছু ক্ষুদে দ্বীপ নজরে আসল, সেখানে বিস্ময় জাগানিয়া নানা স্থাপত্যে সমাহার ও কাঁচের কারখানা, উৎসাহীরা দল সেখানে যাচ্ছে দল বেঁধে।
IMG_1096
IMG_0909
পদব্রজে এত ঘোরাঘুরির পর প্রবল ক্ষিদেকে সাথী করে ঢুকে পড়লাম এক ইতালিয়ান খাবারের দোকানে ( চুপিচুপি জানিয়ে রাখি, ভেনিস ইতালির সবচেয়ে ব্যয়বহুল শহর এবং বিশ্বের অন্যতম ব্যয়বহুল গুলোরও একটি! অথচ যেহেতু উত্তর ইউরোপ থেকে গেছি ইতালি যথেষ্ট সস্তা দেশ মনে হবার কথা! আসলে তাইই, কিন্তু ভেনিস নয়। যেখানে কফির দাম সাধারণ দোকানে ৫ ইউরো আর একটু অভিজাত দোকানে সাড়ে সাত ইউরো! সেখানে অন্যান্য খাবারের দামের কথা আর নাই বা বলি, হবে নাই বা কেন? সারা বছর এত পর্যটকের ভিড়! খাবারের মেন্যু হাতে নিয়ে মনে হলে পিজ্জার দেশে এসেছি, আর পিজ্জা খাব না? দিলাম পিজ্জার অর্ডার, সেই সাথে গলা ভেজানোর জন্য একেবারে তাজা কমলার রস। বিল মেটাবার সময় বোঝা গেল তাজা ফলের দামটাও বেশ ভারী।
IMG_1139
কিছুক্ষণ জিরিয়ে নিয়ে আবার নগর পরিভ্রমণে, ভেনিসে যেহেতু কোন স্থলের যানবাহনের অস্তিত্ব নেই, তাই-ই হয়ত থেকে থেকেই বসার কাঠের বেঞ্চি সেই সাথে পকেট হালকা করার জন্য পানীয়ের দোকানের নানা লোভনীয় সমাহার।
IMG_0795
গ্র্যান্ড চ্যানেলের উপরের বড় সেতুটাতে দাড়িয়ে থাকলাম কিছুক্ষণ তন্ময় হয়ে, কৈশোরের স্বপ্ন নগরী ভেনিসে দাড়িয়ে আছি, সেতুর নিচ দিয়ে সাবলীল ভাবে মাঝিরা চলে যাচ্ছে নানা ধরনের জলযান নিয়ে, কি আশ্চর্য! চারপাশে সারা বিশ্বের সব দেশের মানুষ হাজির হয়েছে মনে হল, মহা হট্টগোলে চলছে ছবি তোলা।
IMG_0901
এই ভিড়েই খানিকটা তিতিবিরক্ত হয়ে ঢুকে পড়লাম এক গলির মধ্যে, সার বেঁধে কংক্রিটের ব্লক বসানো সারা রাস্তায়, চলে গেছে ভিতরের দিকে, এর মাঝে কজন ভিড় করে আছে রাস্তার মাঝখানে। দেখি এক লাল পাথরের স্ল্যাবকে ঘিরে এত ভিড়, কি ব্যাপার , এমন লাল পাথরতো আর চোখে পড়ে নি! শোনা গেল ৫০০ বছর আগে প্লেগ মরণব্যধি হিসেবে ভেনিসে দেখা দেয়, প্লেগের আরেক নাম ছিল ব্ল্যাক ডেথ বা কালো মৃত্যু। ধারণা করা হত আগাগোড়া এক মস্ত কালো আলখেল্লা পড়ে এই মৃত্যুরূপী শয়তান মানুষ শিকার করে বেড়ায় ( আমাদের অঞ্চলের আগের যুগের ওলাওঠা, শীতলাদেবীর সাথে কি আশ্চর্য মিল!)। কিন্তু এই ব্ল্যাক ডেথই এসে থেমে গিয়েছিল এই নির্দিষ্ট জায়গায়, সেই স্মরণেই এখানে স্থাপন করা হয় লাল পাথরের স্মারক,২য় বিশ্বযুদ্ধের সময়ও বোমারু বিমানগুলো এই পাথরের অন্য পাশে কোন অজ্ঞাত কারণে বোমা বর্ষণ করে নি! এভাবেই বুঝি লোকবিশ্বাসের কিংবদন্তীর তৈরি হয়!
IMG_0916
ভেনিসে দারুণ ভাবে আকর্ষণীয় ক্যাথেড্রাল, জাদুঘর আর ভবনের সংখ্যা এত বেশী যে মাত্র কয়েকদিনে এর অর্ধেক দেখাও অসম্ভব। তাও প্রয়াস চালালাম, যদিও জানি বেশী সুখাদ্য একসাথে খেলে বদহজম হবার যেমন সমূহ সম্ভাবনা, তেমন বেশী সংখ্যক দর্শনীয় বস্তু অল্প সময়ের মাঝে দেখলে মনের পর্দায় সবগুলো উপরই চাপ পড়ে।
IMG_0794
তবে অনেক জায়গায়ই ভেনিস একেবারে একরকম দেখতে। অনেকখানি হেটেও মনে হল হয়ত গোলকধাধার চক্করে পড়ে একই জায়গায় ঘুরে ঘুরে আসছি! এর মধ্যে কয়েকবার ফিরতি পথ ধরতে হল সামনে খাল পড়ার জন্য, অন্য যে কোন শহরে একে কানাগলি বলতাম, কিন্তু ভেনিসে কি বলে অভিহিত করি!
IMG_0813
প্রাতঃনমস্য সত্যজিৎ রায়ের অমর সৃষ্টি ফেলুদার অবিস্মরণীয় ছোট গল্প টিনটরেটোর যীশু নিশ্চয় পড়া আছে আপনার, ভেনিসের অন্যতম বিখ্যাত অধিবাসী রেনেসাঁ যুগের অন্যতম সেরা চিত্রকর ওস্তাদ আঁকিয়ে জ্যাকোপ্পো তিনতোরেত্তোর ( মানে ছোট্ট ধোপা, ওনার বাবা পেশাগত ভাবে ধোপা ছিলেন) জীবনের সুদীর্ঘ ২৪ বছর কেটেছে সান রোক্কোর গির্জায়। তারই ফলশ্রুতিতে সান রোক্কোর দেয়ালে আর ছাদে বিশ্বের অতি বিখ্যাত মনকাড়া কিছু চিত্রকলা আমরা দেখতে পাই, এর প্রায় সবগুলোতেই বর্ণিত হয়েছে বাইবেলের নানা ঘটনা। সান রোক্কোর গির্জাতে ঢোকার পর আসলেই চোখ কপালে তুলতে হল কারণ সুউচ্চ ছাদ ভরে আছে তীব্র সম্মোহন ক্ষমতার অধিকারী পেইন্টিংগুলোতে, আবার মেঝের কিছু জায়গায় স্থাপন করা হয়েছে বিশালাকৃতির আয়না, যাতে দর্শনার্থীরা উপর পানে তাকিয়ে ঘাড় ব্যাথা না করেও আয়নার প্রতিফলিত সেই অপার্থিব সৃষ্টি উপভোগ করতে পারেন। এর মাঝে আলাদা করে ক্রুশবিদ্ধ যীশুর বিশাল চিত্রকর্মটির কথা বলতেই হয়।
তড়িৎগতিতে শেষ হয়ে আসছে তিলোত্তমা নগরীতে অবস্থানের দিনগুলি, ক্যামেরায় এই অদ্বিতীয় স্বপ্নলোকের দৃশ্যপট ধারণ করতে করতেই চলে গেল সিংহভাগ সময়, শেষের দিন সারা সন্ধ্যা গ্র্যান্ড ক্যানেলের পাড়ে বসে গোধূলিসূর্যের মৃদু আলো উপভোগ করতে করতে মনে হল, আহা, জীবন কতই না সুন্দর!
IMG_1038
http://www.sachalayatan.com/tareqanu/42093

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

bdnews24.com - Home

ইরান বাংলা নিউজ

বিবিসি বাংলা

দৈনিক সংগ্রাম